Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শহিদুল আলমের গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত যথার্থ: জয়


৩০ আগস্ট ২০১৮ ১৪:২৯

।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।

প্রখ্যাত আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্তকে ‘যথার্থ’ বলে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সন্তান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় তিনি গুজব ছড়িয়ে সহিংসতা উসকে দিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম রিয়েল ক্লিয়ার পলিটিকসে (আরসিপি) এক নিবন্ধে জয় লিখেছেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলন আচমকা সহিংস আন্দোলনে পরিণত হয়। আন্দোলনের এই পরিণতির জন্য যারা দায়ী, তাদের মধ্যে বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলম একজন।’

জয় লিখেছেন, শহিদুল আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে ‘সহিংসতা উসকে দেওয়ার জন্য; তা সত্ত্বেও তিনি সেলিব্রেটি হওয়ার তার পক্ষে আন্তর্জাতিক মহলে হৈ চৈ পড়ে গেছে।’

জয় বলেন, বাসের ধাক্কায় দুই স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় ‘দুঃখবোধে আক্রান্ত হয়ে’ শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আসে এবং সড়কে নিরাপত্তার দাবি জানায়। সরকার “শিক্ষার্থীদের এই দাবি শুনতে পায় এবং তাদের দাবিতে ‘হ্যাঁ’ জানিয়ে সাড়া দেয়।”

জয় আরও উল্লেখ করেন, সরকার ট্রাফিক আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ ও বেপরোয়া গাড়িচালনার জন্য সাজা বাড়ানোর প্রতিশ্রুদি দেয় এবং এতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দ্রুতই সফল হয়। কিন্তু দেশের প্রধান বিরোধী দলের নেতারা শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে রাজনৈতিক সুবিধা হাসিলের সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে। বিএনপি সদস্যরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঢুকে পড়ে, স্কুল ড্রেস পরে তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে যায় এবং শিক্ষার্থীদের উসকে দেয়।

বিজ্ঞাপন

তবে বিএনপির এই উসকানি ‘খুব বেশি দূর যেতে পারেনি’ উল্লেখ করে জয় লিখেছেন, “বিএনপির সঙ্গে শহিদুল আলমও মাঠে নেমে পড়েন এবং তাকে যথার্থভাবেই গ্রেফতার করা হয়। তিনি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পাশাপাশি প্রচলিত গণমাধ্যম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীর ‘মৃত্যু’ নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছেন। তার এই মিথ্যা তথ্য সহিংসতা এবং ক্ষমতাসীন দলের সদর দফতরে হামলাকে উসকে দেয়।”

জয়ের লেখা ওই নিবন্ধে বলা হয়েছে, শহিদুল আলমের ‘মিথ্যা ও প্ররোচণামূলক বক্তব্যের কারণে হামলায় আওয়ামী লীগের এক কর্মীকে অন্ধত্ব বরণ করতে হয়েছে।’

জয় লিখেছেন, ‘শহিদুল আলম ভিন্নমত ধারণ করেন, এ কারণে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি। বরং তার সর্বশেষ বক্তব্য সত্যিকারের ক্ষতির কারণ হয়েছে বলেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার ব্ক্তব্য শান্তিপূর্ণ একটি আন্দোলনকে বিশৃঙ্খল সহিংসতায় রূপ দিতে সহায়তা দিয়েছে।’

‘শিক্ষার্থীদের একটি আন্দোলনকে ছিনতাই করে তাদেরসহ বাংলাদেশি নাগরিকদের জীবনকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়াটা রাজনীতি নয়, এটা সন্ত্রাস,’— লিখেছেন জয়।

প্রধানমন্ত্রী এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা লিখেছেন, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শহিদুল আলম স্বাধীনভাবে ভিন্নমত প্রকাশ করে গেছেন। কখনও কখনও তিনি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে কথা বললেও অন্যান্য সময় তিনি সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন। প্রতিটি সময়ই সরকার তার বাকস্বাধীনতাকে সুরক্ষা দিয়েছে, যা সব বাংলাদেশিরই আছে। কিন্তু সরকারকে জনস্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে কাজ করতে হয় এবং তাকে (শহিদুল) গ্রেফতারের সময় সেই বিষয়টিই বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল। নিশ্চিতভাবেই সরকারের এই উদ্যোগ ছিল প্রয়োজনীয়। তাই শহিদুল আলম ভিক্টিম নন, বরং তার কর্মকাণ্ডই অনেক মানুষের ক্ষতির কারণ হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

‘কোনো জনাকীর্ণ থিয়েটার হলে আগুন না লাগলেও আগুন আগুন বলে চিৎকার দেওয়াটা বেআইনি। শহিদুল ঠিক সেই কাজটিই করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগও সঠিক,’— বলেন জয়।

তিনি আরও লিখেছেন, এ বছর বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ সময়ে ৩ কোটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দেওয়া ও দেশের মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ হওয়াসহ সরকারের অর্জন থেকে দৃষ্টি অন্য দিকে সরিয়ে নিতে বিরোধীরা চেষ্টা করবে— এতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। বিএনপিও যে ফের সহিংস আচরণ শুরু করবে, তাতেও বিস্ময়ের কিছু নেই। তবে বিএনপি ও শহিদুল আলম যা করেছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়।

জয় বলেন, ‘মানুষের ক্ষতি করবে— এমন অনুমোদন না কোনো রাজনৈতিক দল পেতে পারে, না কোনো সেলিব্রেটি আলোকচিত্রী পেতে পারে। মানুষের ক্ষতি করার অধিকার কারও নেই।’

সারাবাংলা/টিআর

শহিদুল আলম সজীব ওয়াজেদ জয়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর