Saturday 18 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঘুষ না দিলে সেবা মেলে না, অভিমত ৮৯ শতাংশ মানুষের


৩০ আগস্ট ২০১৮ ১৬:৫৭ | আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০১৮ ১৬:৫৮

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: গ্যাস, কৃষি, বিচারিক সেবা, বিদ্যুৎ, বিআরটিএ এবং বীমাতে দুর্নীতি ও ঘুষ আদায়ের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এসব সেবা খাতে ঘুষ না দিলে সেবা পাওয়া যায় না বলে মত দিয়েছেন দেশের শতকরা ৮৯ জন মানুষ।

বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডিতে ‘সেবা খাতের দুর্নীতি, জাতীয় খানা জরিপ ২০১৭’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, ২০১৭ সালে জরিপ চালানো সেবা খাতগুলোতে ঘুষ নেওয়া হয়েছে ১০ হাজার ৬৮৮.৯ কোটি টাকা। এতে মাথাপিছু ঘুষের পরিমাণ ৬৫৮ টাকা। যা ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেটের ৩.৪ শতাংশ এবং বাংলাদেশের জিডিপির ০.৫ শতাংশ।

টিআইবির এই জরিপে ৮৯ শতাংশ মানুষ তাদের মতামতে বলেন , ‘ঘুষ না দিলে সেবা পাওয়া যায় না’। এই মতামতের ভিত্তিতে  টিআইবি বলছে, ঘুষ আদায়ে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ বেড়েছে। ঘুষ না দিলে সেবা পাওয়া যাবে না ছাড়াও হয়রানি বা জটিলতা এড়ানো, নির্ধারিত ফি জানা না থাকা, নির্ধারিত সময়ে সেবা পাওয়া, দ্রুত সেবা পাওয়া ও অবৈধ সুবিধা পাওয়ার জন্য ঘুষ লেনদেন হয়েছে বলে উঠে এসেছে এই জরিপে।

জরিপে উঠে এসেছে, গ্রামাঞ্চলের চেয়ে শহরাঞ্চলে গড় ঘুষের পরিমাণ বেশি। খানা প্রতি গড় ঘুষের পরিমাণ গ্রামাঞ্চলে ৩ হাজার ৯৩০ টাকা ও শহরাঞ্চলে ৭ হাজার ৭৩৩ টাকা। এছাড়াও দেখা গেছে নিম্ন আয়ের মানুষ যেমন জেলে, কৃষিকর্ম বা মৎস্য চাষ ও পরিবহন শ্রমিকরা অন্যান্য খাতের মানুষের চেয়ে দুর্নীতির শিকার বেশি হয়েছে।

এই জরিপে আরও উঠে এসেছে, ২০১৭ সালে সর্বোচ্চ ঘুষ আদায়ের তিনটি খাতের মধ্যে গ্যাসে খানাপ্রতি সর্বোচ্চ ঘুষ আদায় করা হয়েছে ৩৩ হাজার ৮০৫ টাকা, বিচারিক সেবায়  ১৬ হাজার ৩১৪ টাকা ও বীমা খাতে ১৪ হাজার ৮৬৫ টাকা। ২০১৭ সালে সার্বিকভাবে খানা প্রতি গড়ে ৫ হাজার ৯৩০ টাকা ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। যা ২০১৫ সালে ছিল ৫৩৩ টাকা।

বিজ্ঞাপন

ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, আমরা ধারণা করেছিলাম, সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে দুর্নীতি ও ঘুষ হ্রাস পাওয়া কথা ছিল। কিন্তু সেটি হয়নি। তবে বেশ কয়েকটি খাতে দুর্নীতি কমেছে  উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি বেতন -ভাতা বৃদ্ধির ফলে হয়েছে কিনা তা জানতে আরও বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এই জরিপ চলাকালে অপেক্ষাকৃত কম বয়সী মানুষের মধ্যে দুর্নীতির মানসিকতা কম দেখা গেছে। তরুণদের মধ্যে দুর্নীতি বিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। কারণ আগামীতে তারাই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেবে।’

শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, ভূমি সেবা, কৃষি, আইনশৃঙ্খলা, বিচারিক সেবা, বিদ্যুৎ, ব্যাংকিং, বিআরটিএ, কর ও শুল্ক, এনজিও, পাসপোর্ট, বীমা ও গ্যাস এই ১৫টি খাতে জরিপ চালায় টিআইবি । এর বাইরে  প্রশ্নপত্র, ওয়াসা, নির্বাচন কমিশন  ও ডাকবিভাগের দুর্নীতি নিয়েও জরিপ চালানো হয়।

টিআইবির জরিপে আওতাভুক্ত মোট খানার সংখ্যা ১৫ হাজার ৮৪০টি। এর মধ্যে গ্রামাঞ্চলে ৬৫ শতাংশ যা ১০ হাজার ২৯৬ জন এবং শহরাঞ্চলে ৩৫ শতাংশ যা ৫ হাজার ৫৪৪ জন।

আরও পড়ুন: শীর্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার দুর্নীতি: টিআইবি

সারাবাংলা/এইজে/জেডএফ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর