সত্যকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী
৩১ আগস্ট ২০১৮ ২০:৩১
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামটি সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলতে ২১ বছর অপচেষ্টা চালানো হয়েছিলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সত্যকে কখনো কেউ মুছে ফেলতে পারে না। সত্যকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারে না। সত্য উদভাসিত হবেই একদিন। জাতির পিতার নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস থেকে সেই নাম মুছে ফেলতে পারেনি। আজকে সারা বিশ্ব তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে।’
১৯৭৫’র ১৫ আগস্টের পর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার না হওয়ার হতাশার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘কারণ ৭৫’র ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর যারা অবৈধভাবে সংবিধান লংঘন করে ক্ষমতায় এসেছিল, তারা খুনিদের বিচার করেনি। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে খুনিদের বিচারের হাত থেকে রেহাই দিতে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছিল।’
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের ত্যাগের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কতো রকমের রাজনীতি দেখি। কেউ রাজনীতি করে শুধু নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য। কেউ রাজনীতি করে রাজনীতির ছত্রছায়ায় ধন-সম্পদের মালিক, অর্থ-সম্পদের মালিক হওয়ার জন্য। কেউ রাজনীতি করে সামাজিকভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য। কিন্তু জনগণের কথা চিন্তা করে জনগণের কল্যাণের কথা ভেবে, জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের কথা মনে করে যারা রাজনীতি করে, ইতিহাস তাদেরেই স্বীকৃতি দেয়। সেই দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
ছাত্রলীগকে শেখ হাসিনা: ‘আমার বয়স হয়েছে, ভবিষ্যৎ তোমরাই’
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা শুধু মুখে নয় তার আদর্শ অনুসরণ, অনুশীলন করা এবং মেনে চলাই হচ্ছে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করেন তিনি।
এবিষয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আর সেটাও যদি করা যায়, তাহলে দেশকে কিছু দেওয়া যায়। দেশের জন্য কিছু করা যায়। একজন রাজনীতিবিদের জীবনে এই চিন্তা-চেতনাই থাকা উচিত। রাজনীতিতে শুধু কি পেলাম? কি পেলাম না, সেই হিসেবে কষবার জন্য নয়। রাজনীতি শুধু কি মূল্যায়ন হলাম, কি হলাম না? সেই হিসাব করবার জন্য নয়। কতটুকু দেশকে দিতে পারলাম, কতটুকু মানুষের জন্য করতে পারলাম, কতটুকু মানুষকে দিয়ে যেতে পারলাম, সেখানেই হচ্ছে তৃপ্তি, আর সেখানেই হচ্ছে সব থেকে বড় পাওয়া। আর এইভাবে চিন্তা করে যারা রাজনীতি করে তাদের কিছু চাইতে হয় না। ইতিহাস তাদের মূল্যায়ন করে এবং মূল্যায়ন করবেই। এটা হল বাস্তবতা।
বঙ্গমাতাও কখনো ভোগ বিলাসে গা ভাসাননি বরং নিজের গহনা বিক্রি করে সংগঠন চালানো, দুঃস্থ নেতাকর্মীদের সাহায্য করা, অসুস্থ নেতাকর্মীদের চিকিৎসার ব্যবস্থার করেছেন বলে দাবি করেন তার কন্যা শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন এবং ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. ইব্রাহিম, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মো. জোবায়ের আহমেদ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের দুর্লভ দু’টি ছবি আলাদাভাবে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
পাশাপাশি সংগঠনের প্রকাশনা মাতৃভূমি’র একটি সংখ্যাও প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়া হয়।
সারাবাংলা/এনআর/এমও