Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নীতির প্রশ্নে আপস নাই: প্রধানমন্ত্রী


৩১ আগস্ট ২০১৮ ২১:০২

।। সিনিয়র করেসপেন্ডন্ট ।।

ঢাকা: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশে-বিদেশে সবার একটি কথা মাথায় রাখা উচিত, নীতির প্রশ্নে আমার আপস নাই। আমার রাজনীতি বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। এটাই আমার একমাত্র রাজনীতি।’

শুক্রবার (৩১ আগস্ট) বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব স্মরণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

১৯৭৫’র ১৫ আগস্ট নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিন্তু দুর্ভাগ্য! এখনো আমি দেখি কতকগুলি প্রেতাত্মা ঘুরে বেড়ায়। যারা আমাদের স্বাধীনতা চায়নি। যারা আমাদের স্বাধীনতার বিরোধী ছিল। যারা সব সময় স্বাধীনতার বিরুদ্ধেই কাজ করেছে। ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যারা সম্পৃক্ত ছিল, যারা ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃত করে দিয়েছিল।’

সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত যুদ্ধবিধস্ত দেশ গড়ার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিন্তু স্বাধীনতার পর পরেই শুরু হয়ে গেল তার বিরুদ্ধে অপবাদ-অপপ্রচার। এটা হলো না, ওটা হলো না। এই ধরনের কথাবার্তা? কারা লিখেছিল? কারা বলেছিল? আর ৭৫’র পর দেখা গেল, তারা আরও দ্বিগুণ উৎসাহে মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। তাদের সেই ষড়যন্ত্র কিন্তু এখনো শেষ হয়নি।’

সত্যকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী

এ বিষয়ে শেখ হাসিনা সড়ক দুর্ঘটনার জেরে নিরাপদ সড়কের দাবিতে গড়ে ওঠা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ‘একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে ছোট্ট শিশুরা রাস্তায় নেমেছে। ওই শিশুদের যে ক্ষোভ, তাদের যে বিক্ষোভ, যে বিক্ষুব্ধ মন, সেটাকে কাজে লাগিয়ে ছোট ছোট শিশুদের ঘাড়ে পা দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য একদল নেমে পড়ল।’

বিজ্ঞাপন

‘এদের মধ্যে অনেকেই খুব জ্ঞানী-গুণী, অনেকেই আঁতেল, অনেকেই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন। কিন্তু এই খ্যাতিসম্পন্নরা কি করেছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ আমি করে দিয়েছি। আর তারি সুযোগ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে, বিভিন্ন জায়গায় অপপ্রচার চালানো, মিথ্যা কথা বলে বলে মানুষকে উসকানি দেওয়া? তদের এই উসকানির কারণে কত শিশুর জীবন যেতে পারত? কত শিশুর ক্ষতি হতে পারত? সেটা তারা একবারও চিন্তা করেনি। বরং শিশুদের এই বিক্ষুব্ধ মনকে ব্যবহার করে নিজের ফায়দা লুটতে চেয়েছিল।আর তাদের বিরুদ্ধে যখনই ব্যবস্থা নিলাম, তখনই চারদিকে যেন হাহাকার। আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকেও বিভিন্ন চাপ, একটা কথা দেশে-বিদেশে সবার মাথায় রাখা উচিত, নীতির প্রশ্নে আপস নাই। এটাই হচ্ছে আমার কথা’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমি স্কুলজীবন থেকেই রাজনীতি করি। আইয়ূব খানের আমলে বৈরি পরিবেশে। আমাদের বইয়ে পাকিস্তান নামে একটি চ্যাপ্টার ছিল। আমি ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়েছিলাম, ওই ২০ নাম্বার বাদ দিয়ে। কারণ আইয়ুব খানের প্রশংসা আমার হাত দিয়ে আমি লিখবো না। আমি লিখতে পারি না। কাজেই আমি সেই মানুষ । আমি ওই ২০ নাম্বারের জন্য ফেইলও করতে পারতাম বা থার্ড ডিভিশনও পেতে পারতাম। কিন্তু আমি ওটা পরোয়া করিনি।
আমি কখনো সেগুলো পরোয়া করিনি।’

ছাত্রলীগকে শেখ হাসিনা: ‘আমার বয়স হয়েছে, ভবিষ্যৎ তোমরাই’

আমার রাজনীতি বাংলার জনগণের জন্য, যে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার জন্য আমার বাবা তার জীবন দিয়ে গেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি যাচ্ছি ন্যায় ও সত্যের পথে যাচ্ছি। আমার মা-ভাইয়েরা জীবন দিয়ে গেছেন। সেই দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই এটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য, সেটাই আমার একমাত্র রাজনীতি। আমি প্রধানমন্ত্রী ছিলাম আরও দুই বার। এখন আছি তৃতীয়বার। আমি তো আমার নিজেকে পরিবর্তন করিনি। ওই দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন আমার বাবা। মহান ত্যাগ করে গেছেন আমার মা।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদি ত্যাগের মনোভাব না থাকত, যদি শুধু নিজের কথা চিন্তা করতাম নিজেকে কিভাবে সাজাব তাই নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম তাহলে দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে পারতাম না। দেশের মানুষকে কিভাবে সুন্দরভাবে বাঁচতে দেবো? সেটাই আমার একমাত্র চিন্তা। যেটা আমার বাবা শিখিয়ে গেছেন।’

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন এবং ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. ইব্রাহিম, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মো. জোবায়ের আহমেদ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের দুর্লভ দু’টি ছবি আলাদাভাবে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।

পাশাপাশি সংগঠনের প্রকাশনা মাতৃভূমি’র একটি সংখ্যাও প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়া হয়।

সারাবাংলা/এনআর/এমও

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

দশম গ্রেড দাবি করায় ৬৪ অডিটরকে বদলি
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৫

সম্পর্কিত খবর