এক নারীকে ৯০০ বার ধর্ষণ, ১৪ বছরের কারাদণ্ড
৩১ আগস্ট ২০১৮ ২৩:০৫
।। রোকেয়া সরণি ডেস্ক ।।
জন ডিকসন। বয়স ৩৮ বছর। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, এক নারীকে প্রায় ৯০০ বার ধর্ষণ করেছেন। শুধু তাই নয়, আরও অসংখ্যা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
একে একে ভুক্তভোগী নারীরা অভিযোগ করতে শুরু করলে, তার দুই বোনও অভিযোগের আঙুল তোলেন জিকসনের দিকে।
ডিকসনের পোষা প্রায় নয় ফুট লম্বা একটি অজগর সাপ রয়েছে, নাম মিচ। সেই সাপের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ এবং অত্যাচার করার অভিযোগ এনেছেন এক নারী।
আরেক নারী অভিযোগ করেন, এডিনবার্গে চলন্ত ট্রেনের টয়লেটে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন ডিকসন।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিচারকাজ শুরু হলে, ডিকসনের দুই বোনও অভিযোগ করেন। জুরি মেম্বারদের তারা বলেন, ডিকসন তাদেরও শারীরিক নির্যাতন করত।
একই ধরনের আরেকটি অভিযোগ আসে ৫৪ বছর বয়সী ম্যাকটাগার্টের বিরুদ্ধে। কেবল যৌন নির্যাতন নয়, তার বিরুদ্ধে ‘ডমেস্টিক ভায়োলেন্স’র অভিযোগও রয়েছে।
এক নারী অভিযোগ করেন, ম্যাকটাগার্ট তাকে প্রায় এক হাজারবার ধর্ষণ করেছে। এ ছাড়া স্কটল্যান্ডের ডান্ডিতে ১৯৮০ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত মোট ১৮ জন নারী নানাভাবে ম্যাকটাগার্টের অত্যাচারের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
স্কটল্যান্ডের উচ্চ আদালতে বিচার শুরু হলে দেখা যায়, এই দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ- তারা প্রায় ১৯০০ নারীকে ধর্ষণ করেছেন।
ম্যাকটাগার্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয় গত সেপ্টেম্বর মাসে। এরপর ৫৩ বছর বয়সী এক নারী আদালতে জবানবন্দি দেন, টানা ৬ বছর ম্যাকটাগার্ট তাকে প্রতিদিন ধর্ষণ করেছে। এমনকি বাচ্চা জন্ম দেওয়ার কয়েক দিনের মাথায় তাকে ধর্ষণ করে ম্যাকটাগার্ট। সেই সঙ্গে মারধর ছিল নিয়মিত ঘটনা।
‘প্রতিবার অত্যাচারের পর ম্যাকটাগার্ট দুঃখিত বলতেন এবং ফুল কিনে দিতেন’- বলেন ওই নারী।
আরেক নারী অভিযোগ করেন, তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন তখন ম্যাকটাগার্ট তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং ধর্ষণ করে। ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর বারবার ‘না’ বললেও শোনেননি ম্যাকটাগার্ট। তিনি ‘যা ইচ্ছা তাই করতে পারে’ বলে ধর্ষণ চালিয়ে যান। আরও অনেক নারী, অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে এবং ছেলেকে যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ উঠে আসে তার বিরুদ্ধে।
তার নির্যাতনের শিকার ৩০ বছর বয়সী এক ভদ্রলোক আদালতে জবানবন্দি দেন। তিনি বলেন, ‘ম্যাকটাগার্ট শয়তানের দ্বারা পজেসড বা অধিকৃত’।
ম্যাকটাগার্ট জানান, তিনি অনেক ভুল করেছেন। তবে ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। আদালতের সামনে নিজেকে ডাইনি-শিকারের বলি বলে দাবি করেন ম্যাকটাগার্ট। আদালত তার অপরাধ, ভুক্তভোগীদের ক্ষতি এবং সামাজিক অবস্থান বিবেচনায় নেয়।
স্কটল্যান্ডের উচ্চ আদালত বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) প্রায় ২৫ বছর ধরে চালিয়ে যাওয়া নির্যাতনের সাজা হিসেবে ম্যাকটাগার্টকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন।
একই আদালতের আরেকটি কক্ষে ডিকসনকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
প্রায় ১৭ বছর চার নারীকে ধর্ষণ এবং অত্যাচার করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১৪ বছরের সাজা দেওয়া হয় জন ডিকসনকে।
সারাবাংলা/এটি