বর্ষবরণে কক্সবাজারে ৫ লাখ পর্যটক
৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৯:৫১
ওমর ফারুক হিরু, কক্সবাজার
রাত শেষে ইংরেজি নতুন বছর ২০১৮ পদার্পণ করবে বিশ্ব। এ নতুন বছরকে বরণ করে নিতে পুরো বিশ্বের মতো বাংলাদেশও প্রস্তুত। নববর্ষকে স্বাগত জানাতে ইতোমধ্যেই কক্সবাজারে গিয়েছেন ৫ লাখ পর্যটক। বর্ষবরণে সারাদেশের মতো কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় সন্ধ্যার পর থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে সকল অনুষ্ঠান। তবে বর্ষবরণে বাড়তি কোনও প্রস্তুতি না থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন পর্যটক ও হোটেল ব্যবসায়ী।
এ বিষয়ে পর্যটকরা বলছেন, বর্ষবরণ উৎসবের আয়োজন ভিন্নভাবে হতে পারত। আবার অনেক পর্যটক বলছেন, নিরাপত্তার জন্য এটিই যথাযথ। হোটেলের সংশ্লিষ্টরাও বলছেন, পর্যটন ব্যবসা ধরে রাখতে নতুন বছরের আয়োজন ভিন্ন হতে পারত।
পুরনো বছরকে বিদায় দিয়ে নববর্ষকে বরণ করতে প্রতিবছর বর্ণিল সাজে সাজানো হয় পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে। গত বছরগুলোতে রাত ১২ টা ১ মিনিটে সমুদ্রের পাড়েই ফানুস আর আতশবাজি উড়িয়ে বরণ করা হত নববর্ষকে। আর এই বর্ষবরণ উৎযাপনে অংশ গ্রহণ করতেন দেশ-বিদেশ থেকে আসা লাখ লাখ পর্যটক।
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পর্যটকরা এসেছেন। সমুদ্রের পাড় ভরে গেছে পর্যটকে। তবে বর্ষবরণের এবার সেই সুযোগ নেই। নিরাপত্তার কারণে হোটেলের অভ্যন্তরে অনুষ্ঠান করতে পারলেও সন্ধ্যার পর বাইরে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে দিচ্ছে না প্রশাসন। এ নিয়ে হতাশ পর্যটকেরা বলছেন, প্রশাসনের সহযোগিতায় রাতে বর্ষবরণ উদযাপন করা যেত। আবার অনেক পর্যটক বলছেন, প্রশাসনের সিদ্ধান্ত যথাযথ হয়েছে।
ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা রায়হান ইকবাল নামে এক পর্যটক জানান, নিরাপত্তার জন্য এই নিয়মটি খুবই ভাল হয়েছে। এতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার শঙ্কা নেই। অন্যদিকে তানিয়া নামে আরেক পর্যটক জানান, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা দলবেঁধে কক্সবাজার এসেছেন থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করার জন্য। কিন্তু প্রশাসনের দেওয়া এ নিয়ম তাদের সব আয়োজন পানসে করে দিল। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, বাইরে অনুষ্ঠানের নিষেধাজ্ঞা না দিয়ে প্রশাসন নিরাপত্তা জোরদার রেখে থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপনের সুযোগ করে দিতে পারত।
এ ব্যাপারে হোটেল ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, থার্টিফাস্ট উদযাপনকে কেন্দ্র করে পর্যটন ব্যবসা চাঙ্গা হয়। তবে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন না থাকায় পর্যটকেরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে হোটেলগুলোতে এবং পর্যটন শিল্পে। কক্সবাজার কটেজ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কাজী রাসেল আহম্মদ নোবেল জানান, বর্ষবরণ উদযাপনে প্রতিবছর রাত ১২ টার পরে সী-বিচে লাখ লাখ পর্যটকের সমাগম হয়। আর থাকে নানা আয়োজন। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে এবারে তা নেই। এ নিয়ে বর্ষবরণে আসা পর্যটকরা সন্তুষ্ট হতে পারছে না। সমুদ্র সৈকতে নিরাপত্তা জোরদার করে বর্ষবরণের আয়োজন করলে পর্যটন নগরীর জন্য লাভজনক হয়।
ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বি জানান, থার্টিফার্স্টকে ঘিরে পর্যটকদের নিরাপত্তা প্রদানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বাড়তি ব্যবস্থা। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সন্ধ্যার পর কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন না থাকলেও পর্যটকেরা স্বাভাবিকভাবে সমুদ্র সৈকতে অবস্থান করতে পারবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
কক্সবাজারে রয়েছে সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস। যেখানে আড়াই লাখ পর্যটক থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
সারাবাংলা/ওএফএইচ/টিএম/একে