আমি প্রধানমন্ত্রীর চাচা, আদর করে এ সব বলেছেন: রব
৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৩:০২
।।আজমল হক হেলাল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। তার সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘অসময়ে নীরব, সময়ে সরব; এর নাম আ স ম রব।’
বিমসটেক সম্মেলন শেষে দেশে ফিরে রোববার (২ সেপ্টেম্বর) এ সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নতুন রাজনৈতিক জোট যুক্তফ্রন্ট গঠন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ড. কামালের বাসায় রাতে বৈঠক ও তাদের রাজনৈতিক তৎপরতার প্রসঙ্গ আসায় প্রধানমন্ত্রী আ স ম রব সম্পর্কে ওই মন্তব্য করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনের পরদিন সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) এক সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে সারাবাংলার কাছে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জেএসডির সভাপতি আ স ম রব।
রব বলেন, ‘চাচাকে তিনি আদর করে এ সব কথা বলতেই পারেন। বঙ্গবন্ধুকে আমি মুজিব ভাই বলে ডাকতাম। সে হিসেবে আমার ভাতিজি আদর করে চাচাকে এসব কথা বলেছেন। আমি ভাতিজির জন্য মিষ্টি এবং ফুলের তোড়া পাঠাব।’
‘উনার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) দুঃসময়ে আমি ছিলাম কিন্তু সুসময়ে আমি নেই। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সময় আমি ছিলাম। একপর্যায়ে আমি বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে দূরে সরে গিয়ে বিরোধীদল গঠন করেছি’ যোগ করেন এ নেতা।
নিজেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক উল্লেখ করে আবদুর রব বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতা নূরে আলম সিদ্দিকী, আবদুল কুদ্দুস, আমি এবং শাজাহান সিরাজ এদের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে ২ মার্চ পাকিস্তানের স্বৈরশাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা প্রথম উত্তোলন করি। বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত যে পতাকা সেই পতাকা সর্বপ্রথম উত্তোলন করি আমি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে দিয়েছিলাম।’
১৯৭১ সালের ৩ মার্চ রাজধানীর পল্টন ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে ‘জাতির জনক’ উপাধিতে তিনিই ভূষিত করেন বলে জানান আবদুর রব।
তিনি বলেন, ‘ওই সময় জাতির জনকের হিমালয় সমান জনপ্রিয়তা ছিল। স্বাধীনতার পর সেই নেতার কাছ থেকে দূরে সরে গিয়ে জাসদ গঠন করেছি। যা করেছি দেশ ও জাতির স্বার্থে করেছি।’
আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘তৎকালীন সময়ে রক্ষীবাহিনীসহ নানান বাহিনীর অত্যাচারে দেশের জনগণ অতীষ্ঠ হয়ে পড়ে। তখন অত্যাচার-অনাচারের বিরুদ্ধে দেশ ও জনগণের স্বার্থে লড়াই করেছি। এখনও লড়াই করছি জনগণের ভোটাধিকারের জন্য। দুর্নীতি, লুটপাট, অত্যাচার, অনাচার, নির্যাতন, গুম, খুন, অপহরণের বিরুদ্ধে লড়াই করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টের পর জাতির জনকের হত্যার বিচারের জন্য গর্জে উঠেছিলাম। কর্নেল তাহের হত্যার পর এক টানা ১০ বছর জেল খেটেছি।’
প্রধানমন্ত্রীকে ভাতিজি সম্বোধন করে এই নেতা বলেন, ‘ভাতিজির ওপর যখন গ্রেনেড হামলা হয় তখনও গর্জে উঠেছি এবং রাজপথে নেমেছি। যাই হোক প্রধানমন্ত্রী দেশের কর্ণধার, সে দিক দিয়ে এবং চাচা হিসেবে আদর করে তিনি অনেক কথা বলতেই পারেন।’
গত ২৮ আগস্ট বেইলি রোডে ড. কামালের বাসায় বৈঠক করেন যুক্তফ্রন্টের নেতারা। বিকল্পধারার সভাপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জেএসডির সভাপতি আ স ম রব ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে আন্দোলন করার কথা জানান যুক্তফ্রন্টের নেতারা।
ওই আন্দোলন প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে রব বলেন, ‘এ যাবত আন্দোলন করে ব্যর্থ হইনি। আমাদের দাবির সঙ্গে জনগণের সমর্থন রয়েছে। আশা করি আমাদের আন্দোলন ব্যর্থ হবে না। আমরা জয়ী হবো।’
‘প্রধানমন্ত্রী আমার চেয়ে বেশি আন্দোলন করেননি। আন্দোলন করে মুজিব ভাইকে রাষ্ট্রপ্রধান করেছি। মুক্তিযুদ্ধ করেছি। দেশ গঠন করেছি। ওই সব আন্দোলন ছিল কঠিন আন্দোলন’ এ কথা বলে মোবাইলে দেওয়া সাক্ষাৎকার শেষ করে আ স ম আবদুর রব।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এসএমএন/একে
আ স ম রব গণভবন জাসদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন