Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফখরুলকে কাদের: জেলের মধ্যে বিশেষ আদালত সংবিধানের লঙ্ঘন কী কারণে?


৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৮:৫৪

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।। 

ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জেলের মধ্যে বিশেষ আদালত সংবিধানের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন কী কারণে? কোথায় লেখা আছে যে এই ধরনের অাদালত বসতে পারবে না?

বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) ধানমন্ডিতে অাওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের পাশে নতুন ভবনে ঢাকা মহানগর আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের এক যৌথসভার শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন। এরপর যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বিএনপি চেয়াপারসনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য খালেদা জিয়ার মামলার কার্যক্রম কেন্দ্রীয় কারাগারে পরিচালনা করার জন্য সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করেছ বলে অভিযোগ করেছেন বলেন, ‘এটা সংবিধানবিরোধী ও সংবিধানের লঙ্ঘন। আমরা কিছুক্ষণ আগে জেনেছি, সরকার একটি বিশেষ প্রজ্ঞাপন জানি করেছে। প্রজ্ঞাপনে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার নামে থাকা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা যা আগে আলিয়া মাদ্রাসায় বিশেষ আদালতে চলছিল। এখন আবার সেটাকে ট্রান্সফার করে নিয়ে আসা হচ্ছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। এই মামলার কার্যক্রম আগামীকাল থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে শুরু হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংবিধানের ৩৫(৩) ধারা অনুযায়ী যেকোনো ফৌজদারি মামলা কার্যক্রম প্রকাশ্যে পরিচালিত হতে হবে। এটাকে ক্যামেরা ট্রাইল করার কোনো সুযোগ নেই। কেন্দ্রীয় কারাগারে ভেতরে মামলা পরিচালনার সরকারি সিদ্ধান্ত সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’

বিজ্ঞাপন

এবিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, যে বিষয়টি নিয়ে তারা কথা বলেছেন কারাগারে মধ্যে কোর্ট বসানো যাবে না এটা তো ইন্ট্রোডিউস (চালু) করেছেন জেনারেল জিয়াউর রহমান, কর্নেল তাহেরক জেলে কোর্ট বসিয়ে ফাঁসি দিয়েছিলেন। এটা কি বিএনপি ভুলে গেছে?

কীভাবে কর্নেল তাহেরের ফাঁসি হয়েছিল? কোথায় হয়েছিল? বিএনপির দিকে এমন প্রশ্ন উত্থাপন করে কাদের আরও বলেন, এটা সংবিধানের কোথাও লেখা নেই যে জেলের মধ্যে বিশেষ প্রয়োজনে বিশেষ অাদালতের ব্যবস্থা করা যাবে না। খালেদা জিয়ার বষয় ও শারীরিক অসুস্থাতাজনিত কারণে আদালত জেলের মধ্যে বিশেষ আদালত বসাতে পারে বিষয়টি তুলে ধরে কাদের বলেন, বয়স বিবেচনায় তার পক্ষে কোর্টে মুভ করা সব সময় হয়ত সম্ভব না। জিয়া চ্যারিটেবল যে মামলা, সেই মামলাও তো তিনি হাজিরা দিচ্ছিলেন না। এমতাবস্থায় তাকে হাজিরা দেওয়া সুবিধা করে দেওয়ার জন্য এই বিশেষ আদালতের ব্যবস্থা।

এর কারণ উল্লেখ করে কাদের বলেন, অসুস্থ হলেও তো মামলা চলবেই! জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা ১০ বছর বিলম্বিত করেছে। প্রলম্বিত করেছে। এই মামলা অনেক অাগেই স্যাটেলড হয়ে যেত, এখানে সরকারের কোনো দোষ নেই। সরকার চেয়েছিল মামলাটা যত দ্রুত নিষ্পত্তি হোক কিন্ত বিএনপির বহুরূপী আইনজীবী, এত বিজ্ঞ-অভিজ্ঞ অাইনজীবীরা, তারা বেগম জিয়া কেসটা ১০ বছর ধরে চালিয়েছে। এখন জিয়া চেরিটেবল ট্রাস্টের যে মামলা, এই মামলাও নানা কৌশলে বিঘ্নিত করার জন্য অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু বিচারকাজ কারো জন্য তো থেমে থাকবে না। বেগম জিয়া যদি অসুস্থতা কারণ দেখিয়ে আদালতে না যান কিন্তু অসুুুুস্থতার কারণে আদালতের মধ্যে যে কোর্ট সেখানে যেতে তো অসুবিধা হবে না?

বিজ্ঞাপন

অার এটা মির্জা ফখরুল সাহেব সুষ্পষ্ট সংবিধাননের লংঘন বলেছেন। সংবিধানের সুষ্পষ্ট লংঘন কি কারণে? কোথায় লেখা আছে যে এই ধরনের অাদালত বসতে পারবে না?

সবসময় তারা এরকম করতে থাকেন, কোনো একটা অজুহাতে জনগণকে বিভ্রান্ত করে এবং তারা এই বিষয়টা নিয়েও একটা ছলনার অপকৌশল নিয়েছে। যেটা দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থাকে এইভাবে সংবিধান লংঘন করা এটা যারা বলে তারাই সংবিধান লংঘন করেছে। কে আদালতে গেল কে গেল মা এটা আদালতের বিষয়, তারা বিচার মানে না, আদালত মানে না, সংবিধান মানে না, এটাই হচ্ছে বিএনপির বৈশিষ্ট্য, এটাই বিএনপির চরিত্র। এটা আদালতের বিষয় আদালতই সেটার জবাব দেবে।

এ ছাড়াও আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। সে বিষয়ে করণীয় ঠিক করতেই আজকের এই যৌথসভা বলেও জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সভায় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আবদুস সোবহান গোলাপ, মৃণাল কান্তি দাস, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, এস এম কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাত, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুন, যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসার, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তারসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনআর/এমআই

ওবায়দৃুল কাদের ফখরুল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর