ভুয়া খবর রোধে ফেসবুক, ইউটিউবের সঙ্গে যোগাযোগের চিন্তা সরকারের
৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২১:৫৪
।। শুভজিত পুততুন্ড, কলকাতা থেকে ।।
ভুয়া খবর ঠেকাতে একাধিক পদক্ষেপ নিতে চলেছে বাংলাদেশ সরকার। এ ব্যাপারে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউব বা হোয়াটসঅ্যাপের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা ও অংশীদারত্বের বিষয়টি নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে আহমেদ পলক জানান ‘যারা ভুয়া খবর তৈরি করে বা মিথ্যা অপপ্রচার করে তারা মানসিকভাবে সুস্থ নয়। আর সেদিকটি খেয়াল রেখেই দেশের মানুষের মধ্যে সচেতনা বৃদ্ধির পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউবসহ যে মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে ভুয়া খবর ছড়ানো হচ্ছে তাদের সঙ্গে কোলাবরেশন বা পার্টনারশিপ করার বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।’
কলকাতার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে (ললিত গ্রেট ইষ্টার্ন) ‘সাইবারকন-২০১৮ অ্যান্ড টেকনোলজি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের ফাঁকে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী জানান ‘বাংলাদেশের যে ১ লাখ ৭০ হাজার স্কুল বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদেরকে কীভাবে অনলাইন ও অফলাইনে সাইবার সিকিউরিটি এবং ডিজিটাল লিটারেসিকে গুরুত্ব দেওয়া যায় সেটা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য মন্ত্রণালয় থেকে ‘ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার’ প্রতিস্থাপন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই সেন্টারের মাধ্যমেই বাংলাদেশের মানুষকে অনলাইন ও অফলাইলনে ইন্টারনেটের ব্যবহার, তার সুফল ও কুফল ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনা বৃদ্ধি করা হবে। ইতিমধ্যেই সরকারের তরফে এ সম্পর্কিত একটি প্রোগ্রামও হাতে নেওয়া হয়েছে।’
মন্ত্রীর বলেন, ‘এখন আর ব্যক্তি বা পরিবারকে আঘাত করতে চাইলে শারীরিকভাবে আঘাত করার দরকার পড়ে না। এমনকি কোনো রাষ্ট্রের ওপর হামলা চালানোর ক্ষেত্রেও এখন পারমাণবিক বোমার প্রয়োজন পড়ে না সে ক্ষেত্রে সাইবার হামলার মাধ্যমেই প্রতিপক্ষ রাষ্ট্রকে স্তব্ধ করে দেওয়া যায়। আর যেহেতু সাইবার স্পেসের কোনো নির্দিষ্ট সীমানা নেই সে ক্ষেত্রে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালানো উচিত। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গকে একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করারও আহ্বান জানান আহমেদ পলক। এ ছাড়া অনুষ্ঠান থেকে দক্ষিণ কলকাতার মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে হতাহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন পলক।
অন্যদিকে পলকের সুরে সুর মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলি যারা তৈরি করছে তা ভুয়া খবর ঠেকাতে ফেসবুক বা ইউটিউবের মতো অ্যাপস প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে উদ্যোগ নিতে। ওই একই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন ‘সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলিকে আরও দায়িত্ববান ও কঠোর হওয়া উচিত। ভুয়া খবর তৈরি করছে বা ছড়ানোর সঙ্গে যুক্ত তাদের চিহ্নিতকরণ করে নিষিদ্ধ করা উচিত।’ বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচনের আগে এই ধরনের ভুয়া খবর প্রভাব ফেলবে না বলেও অভিমত দেন পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী।
বণিকসভা ‘অ্যাসোসিয়েটেড চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অব ইন্ডিয়া’ (অ্যাসোচেম) এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের অতিরিক্ত প্রধান সচিব দেবাশিস সেন, অ্যাসোচেম টেকলনজি কাউন্সিল (পূর্ব) চেয়ারম্যান নবীন জয়সওয়াল, অ্যাসোচেম’এর পূর্ব ও উত্তরপূর্ব ডিরেক্টর পারমিন্দর জিৎ কাউর, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার তৌফিক হাসানসহ অনেকে।
সারাবাংলা/এমআই