ঝগড়ার মধ্যে রনিকে বাস থেকে ফেলে দেয় মানিক, আদালতে জবানবন্দি
৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৯:৩৪
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে ব্যাপক আলোচিত বাস থেকে ফেলে যুবককে হত্যার মামলায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন চালকের সহকারী মো. মানিক সরকার। তার (মানিক) দাবি, নিহত যুবক রেজাউল করিম রনি তাদের বাসের যাত্রী ছিলেন না। পেছনের বাস থেকে নেমে তাদের বাসে উঠে ঝগড়া শুরু করলে তাকে ধাক্কা দেয় মানিক। এতে বাস থেকে ছিটকে পড়েন রনি।
বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আল ইমরান খানের আদালতে জবানবন্দি দেন মানিক সরকার। রিমান্ডে তিনদিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী সারাবাংলাকে বলেন, জবানবন্দিতে মানিক সরকার ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন এবং পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। জবানবন্দি দেওয়ার পর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদে মানিক জানিয়েছেন- নগরীর অলঙ্কার মোড় থেকে সিটি গেইট অভিমুখী দুটি বাসের পেছনটিতে ছিলেন রনি। পেছনের বাসের চালক আগের বাসকে অতিক্রম করে সামনের দিকে যাবার চেষ্টা করে। কিন্তু সাইড পাচ্ছিল না। এক পর্যায়ে সাইড পেয়ে পেছনের বাস সামনের বাসের গতিরোধ করে। এ সময় রনিও নেমে মানিকদের বাসে উঠে যান। সাইড দিচ্ছিল না কেন, বিষয়টি জানতে চান চালক ও সহকারীর কাছে। এতে ঝগড়া বেধে যায়। ঝগড়ার একপর্যায়ে রনিকে ধাক্কা দেয় মানিক।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক (চট্টগ্রাম মেট্রো) সন্তোষ কুমার চাকমা সারাবাংলাকে বলেন, মানিকের বক্তব্য অনুযায়ী- ধাক্কা দেওয়ার ফলে রনি ১০০ গজেরও বেশি দূরে ছিটকে পড়েন। এ সময় মানিকদের বাস তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়। পরে রনি মারা যান।
বাস চালকের সহকারী মানিক সরকারকে (২৬) লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার নুরিয়া হাজীর হাটের দিদার উদ্দিনের বাড়ি থেকে শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) গ্রেফতার করা হয়।
মানিক সরকার নগরীর আকবর শাহ থানার ফিরোজ শাহ কৈবল্যধাম আবাসিক এলাকার মোস্তাক সরকারের ছেলে।
গত ২৭ আগস্ট দুপুরে নগরীর সিটি গেটের অদূরে গ্ল্যাক্সো কারখানার সামনে চলন্ত বাস থেকে পড়ে রেজাউল করিম রনি মারা যান। ভাড়া নিয়ে ঝগড়ার পর বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে রনিকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে বাসচালক ও সহকারীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পরপর স্থানীয়রা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পুলিশ বাসটি আটক করলেও এ সময় চালক ও সহকারী পালিয়ে যায়।
২৮ আগস্ট রাতে আকবর শাহ থানায় নিহত রনির মামা আব্দুর রহমান বাদী হয়ে বাস চালক দিদারুল আলম ও সহকারী মো. মানিককে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। চালক দিদারুল আলম এখনও পলাতক আছেন।
মানিক সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ২ সেপ্টেম্বর দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
সারাবাংলা/আরডি/এমঅাই