মানবতাবিরোধী অপরাধে মিয়ানমারের বিচার করতে পারবে আইসিসি
৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১২:১৩
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড চালানোর অপরাধে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বিচার করতে পারবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) নেদারল্যান্ডের দ্য হেগে অবস্থিত আইসিসি এক আদেশে এই তথ্য জানিয়েছে।
বাংলাদেশ আইসিসির সদস্য রাষ্ট্র কিন্তু মিয়ানমার সদস্য নয়। তাই রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধে আইসিসি মিয়ানমারের বিচার করতে পারবে কি না সেই বিষয়ে বৃহস্পতিবার আইসিসির প্রি-ট্রায়াল চেম্বারে এক শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
ওই শুনানিতে আইসিসির বিচারক পিটার কোভাকস, বিচারক মার্ক পেরিন ডি ব্রিচাম্বো এবং বিচারক রেনে এডিলেড সোপিয়ে আলাপিনি-গানসু রায় দেন যে, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিসি বিচার করতে পারবে।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর যে মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটেছে, তা তদন্তের জন্য আইসিসির বিচারকদের অনুমতি চেয়ে গত ৯ এপ্রিল আবেদন করেন ওই আদালতেরই ফাতোহ বেনসুডা নামের একজন আইনজীবী (চিফ প্রসিকিউটর)। যার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার আইসিসির প্রি-ট্রায়াল চেম্বারের বিচারকরা এই আদেশ দেন।
এর আগে ফাতোহ বেনসুডার আবেদনের প্রেক্ষিতে আইসিসির প্রি-ট্রায়াল বিভাগের প্রেসিডেন্ট গত ১১ এপ্রিল আবেদনটি শুনানির জন্য সংস্থাটির চেম্বার বিভাগে পাঠান। পাশাপাশি তিনি এই বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার এবং সুশীল সমাজের মতামত জানতে চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এদিকে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্তের অনুমতি দেওয়ার আগে গত মে মাসে আইসিসির তিনজন বিচারকের কার্যালয় থেকে বাংলাদেশ সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়। মূলত তিনটি বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে গত ১১ জুনের মধ্যে লিখিতভাবে চিঠির জবাব দিতে বললে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইসসিসিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লিখিতভাবে জবাব জানায়।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা দায়িত্বশীল একটি জাতি। বাংলাদেশ রোম সনদে অনেক আগেই সই করেছে। আইসিসির চিঠির জবাব রোম সনদ মেনেই দেওয়া হয়েছে।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখনো বিশ্বাস করি যে দ্বিপক্ষীয়ভাবে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সম্ভব। এই সংকট মেটাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে ৫টি সুপারিশ পেশ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেখানো ওই পথে এই সংকট মেটানো সম্ভব।’
মো. শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী স্বেচ্ছায়, নিরাপদে এবং পূর্ণ নাগরিক অধিকার নিয়ে তাদের দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাক।’
অন্যদিকে, বাংলাদেশ সরকারের বাইরে সুশীল সমাজের অংশ হিসেবে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস বিভাগের নির্বাহী পরিচালক মনজুর হাসান ওবিই এবং ঢাকা সেন্ট্রাল ওমেনস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক পারউইর হাসান তাদের মতামত এবং রোহিঙ্গা অভিজ্ঞতা আইসিসিতে জমা দেন।
সারাবাংলা/জেআইএল/এমআই