এ মাসেই বড়পুকুরিয়ায় পুরোদমে কয়লা উৎপাদন শুরু
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৩:১৬
|| ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ||
দিনাজপুর : প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির নতুন ফেইজে পরীক্ষামূলক উত্তোলন শুরু হয়েছে। ফলে চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে এই খনি পূর্ণ উৎপাদনে যাবে বলে আশা করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়াম, খনি কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশি খনি শ্রমিকরা। এরই মধ্যে নতুন ফেইজে টানেল নির্মাণকাজ শেষে কয়লা কাটিং মেশিনসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ স্থাপন করা হয়েছে।
বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. ফজলুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, গত ১৫ জুন বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ২০১০ নম্বর ফেইজে মজুদ শেষ হওয়ায় ১৬ জুন থেকে কয়লা উত্তোলন কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ১৩১৪ ফেইজে নতুন করে কয়লা উত্তোলনের জন্য সকল যন্ত্রাংশ স্থাপন করে শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টা থেকে শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে কয়লা উত্তোলন করা হয়। চলতি মাসের মাঝামাঝি বাণিজ্যিকভাবে পূর্ণ উত্তোলনে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। পূর্ণ উৎপাদন যেতে খনির প্রায় সব কাজ শেষ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি পূর্ণ উত্তোলনে যাওয়ার আভাস পেয়ে পাশ্ববর্তী তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালুর প্রস্তুতি চলছে। বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে উত্তরের ৬ জেলার মানুষেরা লো-ভোল্টেজ ও লোডশেডিংয়ের যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পাবে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ভূ-গর্ভে কর্মরত শ্রমিক আবুল বাশার জানান, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ভূ-গর্ভে ১৩১৪ নম্বর নতুন ফেইজে কয়লা উত্তোলন কাজ খুব দ্রুত শুরু করা সম্ভব হবে। নতুন ফেইজে কয়লা উত্তোলন করতে টানেল নির্মাণ ও কয়লা কাটিং মেশিনসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ স্থাপন কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হয়েছে। দ্রুত কয়লা উত্তোলনের জন্য সকল শ্রমিকদের ছুটি বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই পূর্ণ উৎপাদনে যাবে বলে আশা করছেন এই শ্রমিক।
উল্লেখ করা যেতে পারে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে গত জুন মাসের মাঝামাঝিতে ২০১০ নম্বর ফেইজে কয়লার মজুদ শেষ হওয়ায় খনিতে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। নতুনভাবে ১৩১৪ নম্বর ফেসে উত্তোলনের জন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরই মধ্যে খনির কোল ইয়ার্ডে ১ লাখ ৮০ হাজার টন কয়লা মজুদ থাকার কথা থাকলেও ১ লাখ ৪২ হাজার টন কয়লার হদিস মেলেনি। অন্যদিকে কয়লা সংকটে বন্ধ হয়ে যায় তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। কয়লা খনিতে কয়লা কেলেঙ্কারীর ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়। খনি নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা গত ১৯ জুলাই খনির এমডি প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহম্মেদকে প্রত্যাহার ও কোম্পানি সচিব মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানীয়াকে অন্যত্র বদলি করে। একইসঙ্গে খনির মহাব্যবস্থাপক মাইনিং এটিএম নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক খালেদুর ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এই ঘটনায় দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরপর গত ২৪ জুলাই খনির ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুদক।
সারাবাংলা/এসএমএন
কয়লা উত্তোলন বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি বড় পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র