আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে নিষেধাজ্ঞার হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৫:২৫
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
আফগানিস্তান যুদ্ধ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোন ধরনের বিচারের পদক্ষেপ নিয়ে নিলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে(আইসিসি) নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন আমেরিকার নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন। স্থানীয় সময় সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) ওয়াশিংটনে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। খবর বিবিসি।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আফগানিস্তানে বন্দিদের ওপর মার্কিন নির্যাতনের অভিযোগ খতিয়ে দেখার কথা ভাবছে। তবে আমেরিকা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে স্বীকৃতি দেওয়া সদ্যভুক্ত কোন দেশ নয়। গত বছর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের আইনজীবী ফাতেও বেনসুদা বলেছিলেন, আফগানিস্তান যুদ্ধে হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত হওয়া উচিত। এসব ঘটনায় মার্কিন সেনা ও গোয়েন্দারা জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বোল্টন এ বিষয়টি অস্বীকার করেন।
তিনি তার বক্তৃতায় আইসিসিকে অবৈধ উল্লেখ করে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার নাগরিকদের রক্ষায় যেকোনো ধরনের পদক্ষেপ নিবে। এখানে আরও একটি বিষয় বোল্টন অভিযোগ করে বলেন, ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর হুমকি দিয়েছিল ফিলিস্তিন। মার্কিন প্রশাসন ওয়াশিংটনে ফিলিস্তিনের কূটনৈতিক মিশন বন্ধ করে দেবার এটিও অন্যতম কারণ।
আইসিসির বিচারকরা যেকোন বিষয়ে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত বা মতামত জানাতে সক্ষম। তবে এ ব্যাপারে প্যানেলের বিচারকদের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। তবে মার্কিন প্রশাসন মনে করে, আইসিসির বিচারকাজ বিতর্কিত, আইনের ব্যাখ্যা অস্পষ্ট ও ভারসাম্যহীন। মার্কিন সংবিধানের চেয়ে বিচারের জন্য অধিক স্বীকৃত কোন উপায় নেই।
জন বোল্টন সরাসরি বলেন, আমরা আইসিসির সাথে কোন কাজ করবো না, আইসিসিকে কোন সাহায্য করবো না। আইসিসিতে আমরা যোগ দিব না। ওরা নিজেদের মতো করে মরুক। অবশ্য এতকিছুর পর, আইসিসিকে আমরা মৃত বলেই ভেবে থাকি।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র সারাহ হাকবি স্যান্ডার্সও বোল্টনের সাথে একমত প্রকাশ করে বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আইসিসির অন্যায্য পদক্ষেপ থেকে নাগরিকদের রক্ষা করতে যেকোনো পদক্ষেপ নেবেন। আইসিসির বিচারকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আনা হতে পারে এবং তাদের সম্পত্তি জব্দ করার মতো পদক্ষেপ ও নেওয়া হতে পারে। বোল্টন আইসিসির বিচারকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা তাদের মার্কিন বিচার ব্যবস্থায় বিচার করবো। যেসব কোম্পানি বা দেশ এসব কাজে আইসিসিকে সাহায্য করবে তাদেরও একই পরিণতি বরণ করতে হবে বলে বোল্টন হুঁশিয়ারি দেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের ১৭ জুলাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণের মাধ্যমে রোম নীতিমালা গৃহীত হয়। এই নীতিমালা মেনে গঠন করা হয়েছিলো আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসি। ২০০২ সালের ১ জুলাই থেকে সংগঠনটি তার কার্যক্রম শুরু করে। ১২০টি দেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে স্বীকৃতি দেয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ ৭০টি দেশ এ আদালতের সম্পৃক্ততা থেকে নিজেদের দূরে রাখে। বিশ্বে মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত পদক্ষেপ নিয়ে থাকে।
সারাবাংলা/এনএইচ
আরও পড়ুন:
মানবতাবিরোধী অপরাধে মিয়ানমারের বিচার করতে পারবে আইসিসি
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত(আইসিসি) আফগানিস্তান যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র