হৃদরোগেও ভুগছেন খালেদা, প্রেসক্রিপশন রোববার
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৭:১৭
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে কেন্দ্রীয় কারাগারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা।
এ বিষয়ে কারাগারের সহকারী সার্জন ডা. মাহমুদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ওনার আগে যে সমস্যাগুলো ছিল যেমন আথ্রাইটিস, হাঁটুতে ব্যথা, হৃদযন্ত্রেও ব্যথা রয়েছে।
কারা কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম জানিয়েছেন, মেডিকেল বোর্ডের সদস্য প্রায় ২০ মিনিট ধরে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। আগামীকাল রোববার (১৬ সেপ্টেম্বর) চিকিৎসকরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার জন্য প্রেসক্রিপশন দেবেন।
শনিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার পর মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা কারাগারে ঢোকেন। তারা ২০ মিনিট সময় ধরে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন বলে কারা অধিদফতর সূত্র জানিয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাঁচ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডটি শনিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে কারাগার অধিদফতরে পৌঁছায়। পরে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।
কারাগারের সহকারী সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘চিকিৎসক বোর্ডের সদস্যরা খালেদা জিয়ার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। আগামীকাল বোর্ড সদস্যরা অফিসিয়ালি আমাদের কাছে রিপোর্ট পেশ করবেন।’
মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা প্রেসক্রিপশন দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রিপোর্ট পেশের পরই সিদ্ধান্ত হবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্য অবনতির দিকে যাচ্ছে কি না প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘সেটিও বোর্ডের রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যাবে।’
এর আগে, দুপুর ২টার দিকে বিএসএমএমইউ থেকে রওনা দেন মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা। বিএসএমএমইউ সূত্রে জানা গেছে, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়টির মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. এম এ জলিল, কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক, অর্থপেডিক বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বিরু, চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. তারিক রেজা আলী ও ফিজিক্যাল মেডিসিন সহযোগী অধ্যাপক ডা. বদরুন্নেসার সমন্বয়ে খালেদা জিয়ার জন্য এই মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার রায়ে পাঁচ বছরের সাজা হয় খালেদা জিয়ার। ওই দিনই তাকে আদালত থেকে নেওয়া হয় পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে। গত সাত মাসের বেশি সময় ধরে তিনি সেখানে সাজা ভোগ করছেন।
খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়ার পর থেকেই বিএনপি দাবি করে আসছে, তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে এবং তার সুচিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। বিএনপির পক্ষ থেকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার দাবি করা হয়।
এদিকে, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার একাধিক শুনানির তারিখ পড়লেও সেসব শুনানিতে শারীরিক অবস্থার কথা উল্লেখ করে হাজির হননি খালেদা জিয়া। সর্বশেষ গত ৪ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ওই আদালত স্থানান্তর করা হয় কারাগারে। ৫ সেপ্টেম্বর কারাগারেই বসে আদালত। সেদিন আদালতে হাজির হয়ে খালেদা জিয়া বলেন, শারীরিক অবস্থার কারণে তার পক্ষে আর আদালতে হাজির হওয়া সম্ভব না। আদালত যা খুশি সাজা দিতে পারেন।
পরে ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর কারাগারে আদালত বসলেও হাজির হননি খালেদা জিয়া।
এর মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ইউনাইটেড কিংবা অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তির কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জেল কোড অনুযায়ী খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই অনুযায়ীই বিএসএমএমইউয়ের পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে গঠিত হয় মেডিকেল বোর্ড।
সারাবাংলা/এজেড/ইউজে/একে