বিনা বাধায় ফিরে এলো যুক্তফ্রন্ট, প্রেসক্লাবে কর্মসূচি ঘোষণা
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৮:২৯
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: যুক্তফ্রন্টের সভাপতি ও বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর অনুপস্থিতিতে অানুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হলো জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার।
শনিবার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার লক্ষ্য ও দাবি ঘোষণা করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
আরও পড়ুন: যেসব দাবি নিয়ে আসছে ‘জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়া’ ও ‘যুক্তফ্রন্ট’
যুক্তফ্রন্টের সভাপতি সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার কর্মসূচি ঘোষণার কথা থাকলেও কোনো প্রচেষ্টা ছাড়াই পুলিশ বাধা দিতে পারে চিন্তা করে প্রেসক্লাবেই সংবাদ সম্মেলন করে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
শহীদ মিনার নয়, প্রেস ক্লাবে ঘোষণা নিয়ে আসছেন বি.চৌধুরী-ড. কামাল
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই জাসদের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রেসক্লাবের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে, এজন্য তিনি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি।
রবের এই ঘোষণার আগে প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বসে একাধিকবার টেলিফোন করেও আ স ম আব্দুর রব বি চৌধুরীকে অনুষ্ঠানে আসার অনুরোধ জানান। তবে বি চৌধুরী সরাসরি অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন না বলে তাকে জানিয়ে দেন। তার কারণ, পাঁচ দফা দাবিতে বি চৌধুুরির প্রস্তাতিব ‘রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও সংসদের ক্ষমতা ভারসাম্য’ কথাটি রাখা হয়নি। এ কারণে মূলত বদরুদ্দোজা চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে যোগদান করেননি।
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতে গেলে মঞ্চে উপস্থিত আ স ম আব্দুর রব, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও মাহমুদুর রহমান মান্না সরাসরি ঘোষণা দেন, আজকের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন গ্রহণ করা হবে না।
এর আগে আ স ম আব্দুর রব বি চৌধুরির ব্যাপারে তার আগের বক্তব্য পরিবর্তন করে বলেন, বি চৌধুরী যখনই জানতে পেরেছেন আমাদেরকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দেওয়া হবে না। একথা শুনে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সংবাদ সম্মেলনের আগে প্রেসক্লাবের সামনে সমবেত হয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শদীদ মিনারের উদ্দেশ্যে দলবল নিয়ে রওনা হন যুক্তফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ। তবে বিশ কদমের মতো গিয়ে আ স ম আব্দুর রব ঘোষণা দেন, আমাদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে না যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। কারণ পুলিশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ঘিরে রেখেছে। আমরা ধস্তাধস্তি-ধাক্কাধাক্কির রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। ফলে আমরা ফিরে এসেছি। তবে আমাদের যারা যেতে দেয়নি, তাদের ওপর যেন আল্লার গজব নেমে আসে।
অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলার মধ্যেই বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য করার লক্ষ্যে যুক্তফ্রন্ট, জাসদ ও নাগরিক ঐক্য’র নেতৃবৃন্দ তাদের পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন। একই সঙ্গে তাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যও ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন বলেন, এই দেশের মালিক জনগণ। দেশের মালিকদের ঐক্যবদ্ধ করতে পারলে দেশ রক্ষা পাবে, গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত ও কালো টাকার প্রভাবমুক্ত হবে। রাষ্ট্র-সমাজ আগ্রাসন থেকে মুক্ত হবে। জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিরা দেশের মালিকদের ভোটে নির্বাচিত হবে।
তিনি বলেন, কার্যকর গণতন্ত্র, অাইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচনে ভেজাল হলে দেশের মালিক আর জনগণ থাকে না।
এ ছাড়া আগামি তিন বছর পর স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি হবে উল্লেখ করে ড. কামাল বলেন, আমরা এ তিন বছরের মধ্যে দেশে কার্যকর গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও দেশের মালিক যে জনগণ তা প্রতিষ্ঠা করবো। মানুষের স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করবো। ব্যক্তির বাক স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনবো।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমআই