একনেকের চৌকাঠে ইভিএম প্রকল্প!
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২৩:২৫
।। জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: বহুল আলোচিত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার প্রকল্প উঠতে পারে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে। একনেকের জন্য তৈরি করা প্রকল্পের তালিকায় না থাকলেও আজ সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় প্রকল্পটি সরাসরি টেবিলে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একনেকের আগামীকাল মঙ্গলবারের (১৮ সেপ্টেম্বর) বৈঠকে অনুমোদনের জন্য ৯টি প্রকল্প তালিকায় রয়েছে। তবে এর বাইরেও আরও পাঁচটি প্রকল্প অনুমোদন পেতে পারে আগামীকালের বৈঠকে। ইভিএম প্রকল্পটিও সেই পাঁচটি প্রকল্পের একটি। সেই অর্থে একনেকের চৌকাঠে রয়েছে প্রকল্পটি। মঙ্গলবার তা দরজা পেরিয়ে উঠতে পারে একনেকের টেবিলে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন- আরপিও পাল্টে ৩৮২৯ কোটি টাকায় তড়িঘড়ির ইভিএম!
পরিকল্পনা কমিশনের নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানায়, এর আগে গত মঙ্গলবার (১১ সেপ্টেম্বর) ইভিএম প্রকল্পটি একনেকে উঠবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। কিন্তু তারপরও এটি একনেক ওঠা নিয়ে সংশয় ছিল। কেননা, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার সুপারিশগুলো পরিপালন করে তড়িঘড়ি সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প (আরডিপিপি) পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায় নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সেটি মনোপুত না হওয়ায় আবারও ফেরত পাঠানো হয় উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি)। পরে নির্বাচন কমিশনের প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আজ সোমবার দিনভর ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে অবশেষে একনেক উপস্থাপনের প্রাথমিক অনুমতি পেতে সক্ষম হন।
সূত্র জানায়, ‘নির্বাচন ব্যবস্থায় অধিকতর স্বচ্ছতা আনতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনা, সংরক্ষণ ও ব্যবহার’ নামের প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে অনুষ্ঠিত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় ইভিএম কেনার যুক্তি হিসেবে নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছিল, আপডেট নতুন ইভিএম মেশিন রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন-২০১৭-এ পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হয় এবং একটি কেন্দ্রের ছয়টি কক্ষে এই যন্ত্রের মাধ্যমে সফলভাবে ভোট নেওয়া হয়। ভোটগ্রহণ শেষে প্রতিটি কক্ষে ভোট গণনার সময় লাগে মাত্র এক মিনিট। দেশি-বিদেশি ও নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মিডিয়া এবং সর্বসাধারণের মতামত অনুযায়ী ইভিএম পরিচালিত ভোটকেন্দ্রের নির্বাচন নিরপেক্ষ, সহজ ও সময়সাশ্রয়ী হয়েছে। ওই নির্বাচনের সফলভাবে ইভিএমের ব্যবহার হওয়ায় এই যন্ত্রের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও সফলভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ায় অন্যান্য নির্বাচনেও ইভিএম ব্যবহারের মাধ্যমে সুষ্ঠ, অবাধ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে নির্বাচন কমিশন প্রকল্পটি প্রস্তাব করেছে।
আরও পড়ুন- ইভিএম চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না: সাবেক সিইসি
পিইসি সভার কার্যপত্রে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। প্রকল্পটি চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) অন্তর্ভুক্ত নেই। কিন্তু এটি প্রক্রিয়াকরণে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি নেওয়া হয়েছে।
এই প্রকল্পের আওতায় দেশব্যাপী বিভিন্ন নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয়সংখ্যক ইভিএম মেশিন কেনা, সংরক্ষণ ও ব্যবহার করা হবে। এছাড়া নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব জনবলের জন্য ইভিএম ব্যবহার সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ আয়োজন এবং ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের জন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে এই প্রকল্পের আওতায়।
আরও পড়ুন-
আরপিওতে সংযোজন হচ্ছে ইভিএম ব্যবহার
ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন, ১০০ আসনে ‘ইভিএম ব্যবহার’
সারাবাংলা/জেজে/টিআর