ইয়েমেন দ্বন্দ্ব: ‘আরও দশ লক্ষ শিশু দুর্ভিক্ষের শিকার হবে’
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৯:৩৯
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
ইয়েমেনে আরও দশ লক্ষেরও বেশি শিশু দুর্ভিক্ষ ঝুঁকিতে আছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে শিশু অধিকার বিষয়ক সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’। বুধবার(১৯ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে আসে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটিতে সহিংসতা ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের ফলে খাবারের মূল্যবৃদ্ধি, ইয়েমেনি মুদ্রার দরপতন ইত্যাদি কারণে খাদ্য-নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ভুগছে ইয়েমেনের অধিকাংশ পরিবার।
এছাড়া, বন্দর নগরী হুদাইদাহতে আরও বড় ধরনের যুদ্ধের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখান থেকেই বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে সাহায্য ও ত্রাণ দেওয়া হয়ে থাকে। তাই যুদ্ধ শুরু হলে ত্রাণ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হবে ও দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি বাড়বে।
সেভ দ্য চিলড্রেন এর প্রধান নির্বাহী হেলে থর্নিং বলেন, ‘লক্ষ লক্ষ শিশু জানে না, আদৌ তাদের পাতে পরবর্তী খাবার জুটবে কিনা! উত্তর ইয়েমেনের একটি হাসপাতাল আমি পরিদর্শন করেছিলাম। সেখানে শিশুদের কান্না করবার শক্তিটুকুও নেই। চলমান এই যুদ্ধের কারণে ইয়েমেনে একটি প্রজন্ম হুমকির মুখে পড়েছে।’
গৃহযুদ্ধের কারণে শিক্ষক, সরকারি চাকরিজীবী ও বিভিন্ন পেশার মানুষের নিয়মিত বেতন হচ্ছে না। কেউ কেউ বেতন পাচ্ছেন না দুবছর ধরে। যুদ্ধ শুরুর আগের তুলনায় খাদ্যের দাম বেড়েছে শতকরা ৬৮ ভাগ। তেমনি ইয়েমেনি রিয়াল দাম হারিয়েছে শতকরা ১৮০ ভাগ।
চলতি মাসের শুরুর দিকে সেভ দ্য চিলড্রেনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটিতে পাঁচ বছরের নিচে অন্তত ৪ লক্ষ শিশু পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। এরমধ্যে ৩৬ হাজার শিশু এই বছরেই মৃত্যুবরণ করতে পারে। ইয়েমেনে বর্তমানে ৫০ লক্ষ শিশু দুর্ভিক্ষের শিকার।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সাল থেকে শুরু হওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতায় ইয়েমেন এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তখন হুথি বিদ্রোহীরা দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা দখল নেয় ও প্রেসিডেন্ট আব্দে মানসুর হাদিকে দেশত্যাগে বাধ্য করে। হাদি পরবর্তীতে সৌদি আরব পালিয়ে গেলেও তার অনুগত সেনাবাহিনীর একাংশ হুথিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক দেয়। তবে হুথিদের পেছনে ইরানের সমর্থন থাকায় সৌদি আরবের নেতৃত্বে সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ আরো ৭টি মিত্র দেশ হাদি সরকারকে পুনরায় ক্ষমতায় বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়। হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামা সৌদি জোটকে সামরিক সহায়তা দিয়ে এগিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স।
সারাবাংলা/এনএইচ