Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আলোয় সেজেছে সুপ্রিম কোর্ট ভবন


১ জানুয়ারি ২০১৮ ২০:২০

আব্দুল জাব্বার খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা : দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট এ প্রথম বিচারিক কার‌্যক্রম শুরু হয়। দীর্ঘ ৪৫ বছর পর হলেও এই প্রথম সুপ্রিমকোর্টের বিচারিক কাজ শুরুর দিন ১৮ ডিসেম্বরকে ‘সুপ্রিমকোর্ট দিবস’ হিসেবে পালন করবে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন। গত ২৫ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় সিদ্ধান্ত হয় প্রতি বছর ১৮ ডিসেম্বর দিনটিকে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট দিবস হিসেবে পালন করবে। তবে ২০১৭ সালে ১৮ ডিসেম্বর শীতকালিন অবকাশ থাকায় ২০১৮ সালের ২ জানুয়ারি দিবসটি পালন করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

সে হিসেবে আগামীকাল ২ জানুয়ারি মঙ্গলবার পালিত হতে যাচ্ছে প্রথম সুপ্রিমকোর্ট দিবস। দিবসটি উপলক্ষে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন বেশ কিছু কর্মসুচি হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পুরো সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আলোকসজ্জা, আলোচনা সভা ও স্মারক উন্মোচন।

দিবস পালনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের স্পেশ্যাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান, সুপ্রিমকোর্ট দিবস পালনে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পুরো সুপ্রিমকোর্ট অঙ্গণকে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে সুপ্রিমকোর্টের জাজেস স্পোর্টস কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠান শুরু হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, বিশেষ অতিথি থাকবেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। এ ছাড়া হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের বর্তমান বিচারপতি, সাবেক বিচারপতিবৃন্দ ও সিনিয়র আইনজীবীসহ আইনাঙ্গনের কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণা জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিচার বিভাগের ইতিহাসে এই প্রথম সুপ্রিমকোর্ট দিবস পালনের বিষয়ে জানতে চাইলে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম বলেন, সুপ্রিমকোর্টের প্রতি মানুষের বিশ্বাস, ভালবাসা, শ্রদ্ধা রয়েছে। সুপ্রিমকোর্ট যদি সেই দায়িত্ব পালন করে থাকে তাহলে এটা ক্রমে বাড়তে থাকবে। আর যদি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় তাহলে এর প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা কমে যাবে ।

সুপ্রিমকোর্ট দিবসটি পালন করার ঘোষণা দেওয়ায় সুপ্রিমকোর্টের প্রশাসনকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, তারা এ বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসেছে এবং দিবসটি উদযাপন করা শুরু করেছে। আমার বিশ্বাস প্রতি বছরে এই দিবসটি পালন হবে এবং জনগণের আশা প্রত্যাশা পূরণে সুপ্রিমকোর্ট তার দায়িত্ব পালন করে যাবে।

বিচার কাজে বিচারক ও আইনজীবীদের মধ্যে সহযোগিতা সম্প্রীতি থাকতে হবে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, সুপ্রিমকোর্টের দায়িত্ব পালনে আইনজীবীরা যেহেতু একটি অঙ্গ তারাও সহযোগিতা করে যাবেন। তাহলেই বিচারিক কাজে গতি আসবে।  আর এ দিবস পালনে বিচারক ও  আইনজীবীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বমূলক সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বিচার বিভাগ সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন হয়েছে এমনটি বলা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিচারকগণ বিচার কাজ পালনে অবশ্য স্বাধীন। স্বাধীনভাবেই তারা বিচার কাজ পরিচালনা করছে। কিন্তু বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন হয়েছে এটা বলা না গেলেও এটুকু বলতে পারি বিচার বিভাগ আস্তে আস্তে পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতার দিকে যাচ্ছে। আমার বিশ্বাস আস্তে আস্তে নিম্ন আদালতসহ বিচার বিভাগ পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা অর্জন করবে।

এ প্রসঙ্গে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, বিলম্ব হলেও সুপ্রিমকোর্ট দিবস পালনে যে উদ্দ্যোগ নেওয়া হয়েছে সেটি একটি শুভ উদ্যোগ।

তিনি বলেন, এ দিবসের ফলে বিচারপতি আইনজীবীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি হবে। বিচারিক কাজে গতিও বৃদ্ধি পাবে।

আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এটি একটি শুভ পদক্ষেপ। দিবসটি উদযাপন সার্থক হবে যদি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হয়। দিবসটির সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে হলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে হবে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। তাহলেই দিবসটি পালনে যথাযথ হবে।

গত ২৫ অক্টোবর ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞার সভাপতিত্বে ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়। ফুলকোর্ট সভায় সর্বসম্মতি ক্রমে সিদ্ধান্ত হয় যে, স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী প্রথম যে দিন উচ্চ আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল (১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর)। সেইদিন অর্থাৎ ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস পালন করা হবে। তবে যেহেতু এছরের ১৮ ডিসেম্বর অবকাশকালীন ছুটি ঘোষিত আছে। সেহেতু ২ জানুয়ারি ২০১৮ সালের এ দিবসটি পালন করা হবে।

দিবসটি পালনে আপিল বিভাগের বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দারকে প্রধান করে পাচঁ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।

 সারাবাংলা/এজেডখান/একে

সুপ্রিম কোর্ট দিবস

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর