Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এলএনজি প্রকল্পে দরকার দুই বিলিয়ন ডলার : চলতি সপ্তাহে বৈঠক


১ জানুয়ারি ২০১৮ ২০:৩৯

হাসান আজাদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) সরবরাহ করতে প্রায় দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন। চলতি বছরে আমদানীকৃত এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি জাতীয় গ্যাস সঞ্চালন লাইনে যোগ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে সরকারের গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি চলতি সপ্তাহেই বৈঠকে বসছেন। জ্বালানি বিভাগের উর্দ্ধতন এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞাপন

সরকার গঠিত কমিটির সদস্য সচিব রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি (আরপিসিএল)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুজ্জামান এ প্রসঙ্গে সারাবাংলাকে বলেন, এলএনজির জন্য আমরা ইতোমধ্যে জ্বালানী নিরাপত্তা তহবিল থেকে কিছু টাকা পাচ্ছি। এ ছাড়া বেশ কিছু কোম্পানি এই খাতে বিনিয়োগ ও কাজ করতে আগ্রহ দেখিয়েছে।

কমিটির কাজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের প্রয়োজন মেটাতে যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তার যোগানের বিষয় নিয়েই কমিটি মূল কাজ করবে। এ জন্য আমরা ইন্টারন্যাশনাল ইসলামি ট্রেড ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইটিএফসি) এবং অন্যান্য দাতা সংস্থার কাছে প্রস্তাব দেব। কী ধরনের প্রস্তাব হবে তা কমিটির সদস্যরা আলোচনা করে নির্ধারন করবেন।

কামরুজ্জামান জানান, আমরা আশা করছি চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ৫ শ মিলিয়ন ঘনফুট এবং অক্টোবর মাসে আরও ৫ শ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যোগ করতে পারবো। এ জন্য আমাদের ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ১৬ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, সরকারের এলএনজি নির্ভর ১৩ হাজার ৮৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। এরই মধ্যে যেসব কোম্পানি এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিমার্ণ করতে প্রস্তাব দিয়েছে সরকার তাদের গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছে। এ সব কোম্পানির মধ্যে রয়েছে দেশের সামিট গ্রুপ, ইউনাইটেড গ্রুপ, ভারতীয় কোম্পানি রিলায়েন্স, জাপানি কোম্পানি মিতশু অ্যান্ড কোং এবং জামার্নীর সিমেন্স।

বিজ্ঞাপন

এদের মধ্যে জামার্নীর কোম্পানি সিমেন্স এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিমার্ণে ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সরাসরি বিনিয়োগ (এফডিআই) করার কথা জানিয়েছে। ভারতের রিলায়েন্স পাওয়ার লিমিটেড মহেশখালীতে ৩২ শ মেগাওয়াট এবং চায়না পেট্রেলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্চিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড মেঘনা ঘাটে ১৫ শ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি কেন্দ্র নিমার্ণের প্রস্তাব করেছে।

ওই কর্মকর্তা জানান, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যে দুই হাজার মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতার চারটি ভাসমান এলএনজি স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) স্থাপন করবে।
এর আগে গত ২০ ডিসেম্বর তরল প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি (লিকুফাইড ন্যাচারাল গ্যাস) খাতে অর্থায়নের জন্য নয় সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) মো. জাকির হোসেনকে ৯ সদস্যের কমিটির প্রধান করা হয়েছে। এ ছাড়া রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানির (আরপিজিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালককে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে কমিটিপর কার্যপরিধি সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে, এলএনজি খাতে কমিটি দেশি-বিদেশি অর্থায়নের সম্ভাব্য সোর্স নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অর্থায়নের সম্ভাবনা বিশ্লেষণ ও পুঁজিবাজার থেকে অর্থায়নের সম্ভাবনা পরীক্ষা করে সুপারিশ তৈরি করা। আগামী এক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে সুপারিশ প্রনয়ণের জন্য বলা হয়েছে।

সরকার ইতোমধ্যে বড় আকারে এলএনজি আমদানির দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এর একটি করছে আমেরিকান কোম্পানি  এক্সিলারেট এনার্জি। অন্যটি শীর্ষ স্থানীয় দেশীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপ। প্রতিষ্ঠান দুটি দৈনিক ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের সমপরিমাণ এলএনজি এনে তা পুনরায় গ্যাসে রূপান্তরিত করে পাইপলাইনে সরবরাহ করবে। এর জন্য কক্সবাজারের মহেশখালীতে তৈরি হচ্ছে ভাসমান টার্মিনাল বা এফএসআরইউ (ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রি-গ্যাসিফিকেশন ইউনিট)।

এর মধ্যে এক্সিলারেট এনার্জির ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে আগামী বছরের এপ্রিলে। সে অনুযায়ীই সব কাজ করছে কোম্পানিটি। এর পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে, অর্থাৎ আগামী বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে সরবরাহ শুরু হবে সামিটের ৫০ কোটি ঘনফুট।

সারাবাংলা/এইচএ/জেডএফ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর