রিসোর্ট থেকে মূর্তি সরাল মালদ্বীপ পুলিশ
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১২:২৬
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
ইসলামী সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় মালদ্বীপের একটি বিলাসবহুল হানিমুন রিসোর্ট থেকে মানবাকৃতির বিভিন্ন মূর্তি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) দেশটিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক দুইদিন আগে শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) সিরু ফেন সুশি রিসোর্টে এই ঘটনা ঘটলো।
পাঁচ তারকা মানের রিসোর্টটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটনকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। সেটির অন্দরসজ্জার কাজে বেশকিছু মানুষের বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির মূর্তি ব্যবহার করা হয়।
তবে শুক্রবার সকাল হতেই রিসোর্টের অতিথিরা দেখতে পান, পুলিশে ভরে গেছে রিসোর্ট। তবে অস্ত্রের বদলে সেদিন পুলিশ সদস্যদের হাতে ছিল কুঠার, কনক্রিট কাটার করাত এবং দড়ি। আর এসব ব্যবহার করে রিসোর্টের সাজসজ্জার কাজে ব্যবহার করা মানব মূর্তিগুলো ভেঙে ফেলতে থাকেন তারা।
এর আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়েমেন অভিযোগ করেন যে, পশ্চিমা শক্তি সমর্থিত বিরোধী দল মালদ্বীপে ইসলামকে অপমান করার চেষ্টা করছে।
উত্তর মালদ্বীপের অসমাপ্ত একটি বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে ইয়েমেন আরো অভিযোগ করেন যে, পশ্চিমা সংস্কৃতির সঙ্গে মিল রেখে করা কোনো কাজ তাদের সমাজ মেনে নেবে না। সাধারণ মানুষের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের উন্নয়ন এবং অগ্রগতি দেবো। বিরোধী দল কী বলছে? তারা গণতন্ত্রের কথা বলে…যা তারা পশ্চিমা গণতন্ত্রের নামে করছে। তারা সমকামীদের অধিকার আদায়ের কথা বলছে।’
আল জাজিরা জানিয়েছে নিজের ভাষণে ওই রিসোর্টে পুলিশি অভিযানের বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।
এর আগে গত জুলাই মাসেই ইসলামি মূল্যবোনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন অভিযোহে সিরু ফেন ফুসি রিসোর্ট থেকে প্রায় ৩০টির মতো মূর্তি সরিয়ে নিতে বলেন। এগুলোকে তিনি সাধারণ মানুষের মূল্যবোধের বিপরীত বলেও উল্লেখ করেন।
বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) পুলিশ জানায়, রিসোর্টটি থেকে মূর্তি সরিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে তাদের নির্দেশ দিয়েছেন সিভিল কোর্ট। আদেশে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে মানবাকৃতির মূর্তি সরিয়ে ফেলতে বলা হয়।
টুইটারে পোস্ট করা এক ভিডিওতে পুলিশ সদস্যদের মূর্তিগুলো লেগুনের পানিতে ফেলে দিতে দেখা যায়।
তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো বক্তব্য দেয়নি রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ। রিসোর্টটি কানাডার চেইন হোটেল ফেয়ারমন্টের একটি প্রতিষ্ঠান।
অন্যদিকে মালদ্বীপের মানবাধিকার সংস্থা মালদ্বীপিয়ান ডেমোক্রেসি নেটওয়ার্কের নির্বাহী পরিচালক সাহিন্দা ইসমাইল পুলিশের এই কর্মকাণ্ডকে ধ্বংসাত্মক বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের ভোট পাওয়ার চেষ্টা করছেন প্রেসিডেন্ট।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে নিষিদ্ধ হয়ে এখন পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার জন্য ধর্মকে প্রচারে হাতিয়ার হিসেবে নিয়েছেন বলেও প্রেসিডেন্টর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন এই মানবাধিকার কর্মী।
সারাবাংলা/এসএমএন