Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চর্মরোগে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ নয়


২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৭:৫০

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: ‘চর্মরোগে আক্রান্ত রোগীদের আরও সচেতন হতে হবে এবং যেকোনো চর্মরোগ হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া যাবে না’, বলেছেন সংশ্লিষ্টরা।

রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী লাউঞ্জে চর্মরোগ বিষয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি নিয়ে আয়োজিত এক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে ((Scientific Seminar on Updates in Dermatology) বক্তারা এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চর্ম ও যৌনব্যাধি বিভাগের উদ্যোগে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, ‘ছত্রাক জাতীয় চর্ম রোগের চিকিৎসা, লেজারের মাধ্যমে চিকিৎসা ও কসমেটিক সার্জারির ক্ষেত্রে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের আরও সচেতন ও সতর্ক হতে হবে এবং রোগীদের যৌক্তিকভাবে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। অন্যদিকে রোগীদেরও আরো সচেতন হতে হবে এবং চর্ম রোগ হলে চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন করা যাবে না।’

বক্তারা বলেন, ‘অপচিকিৎসা, ভুল চিকিৎসা, হাতুড়ে ডাক্তারের চিকিৎসা এবং অবৈজ্ঞানিক ওষুধ সেবনের কারণে কিংবা অপ্রয়োজনীয় লেজার সার্জারির কারণে রোগীর অনেক ক্ষতি হয়, এমনকি রোগীর শরীরে ওষুধের কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়ায় রোগ নিরাময় কঠিন বা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই এসব সমস্যা নিরসনে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল বৈজ্ঞানিক সেশন। সেখানে প্যানেল এক্সপার্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- অধ্যাপক এজেডএম মাইদুল ইসলাম, অধ্যাপক এম এ ওয়াদুদ, অধ্যাপক এম ইউ কবির চৌধুরী, অধ্যাপক আগা মাসুদ চৌধুরী, অধ্যাপক মো. আকরাম উল্লাহ সিকদার, অধ্যাপক এম এ রউফ। সেখানে ডার্মাটোলজি সার্জারি, সোরিয়াসিস (ত্বকের প্রদাহজনিত রোগ) রোগের প্রবণতা বিষয়ক গবেষণার ফলাফল, কুষ্ঠ রোগের জটিলতা ও চিকিৎসার সর্বশেষ অবস্থা, ছত্রাক জাতীয় চর্ম রোগের চিকিৎসা ইত্যাদি তুলে ধরা হয়।

বিজ্ঞাপন

সোরিয়াসিস রোগের প্রবণতা বিষয়ক গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়, বাংলাদেশের প্রতি এক হাজার জনে সাতজনের এই রোগের প্রবণতা রয়েছে আর কুষ্ঠ রোগের ক্ষেত্রে জানানো হয়, দেশে বর্তমানে কুষ্ঠ রোগের কার্যকর চিকিৎসা রয়েছে।

সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক এম এ ওয়াহাব, সহযোগী অধ্যাপক ডা. অসিম কুমার নন্দী, ডা. দীপক কুমার দাস, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. রফিকুর মওলা, সহকারী অধ্যাপক ডা. তুষার কান্তি সিকদার।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘চিকিৎসার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের আমলে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে বর্তমান সরকার ১২ হাজার চিকিৎসক, ১৫ হাজার নার্স ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ দিয়েছে। গণমানুষকে সেবা দিতে বর্তমান সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তৃণমূল্য স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতেই বর্তমান সরকার গ্রামে-গঞ্জে আবারো কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মশিউর রহমান রাঙ্গা হাতুড়ে ডাক্তারদের বিষয়ে রোগীদের আরো বেশি সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন চিকিৎসার বিষয়ে রোগী বা তাদের স্বজনদের কোনো অভিযোগ থাকলে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনে (বিএমএ) অথবা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে (বিএমডিসি) জানাতে অনুরোধ করেন।

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও চর্ম ও যৌনব্যাধি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার বলেন, ‘শিশু মৃত্যুর হার কমেছে, মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে, গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু হয়েছে, গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ বছরে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে চর্ম রোগের ক্ষেত্রে আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক সাফল্য অর্জন করা ইতোমধ্যেই সম্ভব হয়েছে। মনে রাখতে হবে, সোরিয়াসিস, লেপরোসিসসহ (কুষ্ঠরোগ) অন্যান্য জীবাণুবাহিত চর্ম রোগের যথার্থ নিয়ন্ত্রণ জরুরি। তার জন্য প্রয়োজন চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞদের নিরন্তর গবেষণা ও চিকিৎসা সেবায় মনোনিবেশ।’

সারাবাংলা/জেএ/এমও

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর