‘নাহিদের আশ্বাস মানিনা মানবো না’
২ জানুয়ারি ২০১৮ ১৩:৪৫
সিনিয়র করেসপন্ডেট
ঢাকা: ‘শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস, মানিনা মানবো না। নাহিদের আশ্বাস মানি না মানবো না।’
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনশনরত শিক্ষকদের অনশন ভাঙাতে আসেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এসময় তিনি বলেন, নীতিমালা করে পর্যায়ক্রমে সারাদেশের নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্ত করা হবে। শিক্ষকরা যেন অনশন ভেঙে বাড়ি ফিরে যায়। তার এমন ঘোষণার পর বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ক্ষুধার্ত, অসুস্থ, বঞ্চিত শিক্ষকরা। তাৎক্ষণিকভাবে মন্ত্রীর সামনেই স্লোগান দিতে থাকেন, শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস-মানিনা মানবো না। নাহিদের আশ্বাস মানিনা মানবো না। শিক্ষকদের স্লোগান আর বিক্ষোভে এসময় দ্রুতই প্রেস ক্লাব এলাকা ত্যাগ করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা এসময় ক্ষোভের সঙ্গে উচ্চস্বরে বলতে থাকেন প্রতিবছরই এমন আশ্বাস দেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু তাদের প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয় না। তাদের বঞ্চনা শেষ হয় না। ক্ষুধা, দারিদ্র আর অসহায়ত্ব আরও দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হয়। তাই এবার এমপিওভুক্তির ঘোষণা ছাড়া তারা রাজপথ ছাড়বেন না। জীবন থাকতে ঘরে ফিরে যাবেন না তারা।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে শিক্ষকদের অনশন ভাঙ্গাতে প্রেস ক্লাবের সামনে আসেন শিক্ষামন্ত্রী। এসময় তার সঙ্গে মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আপনার তীব্র শীতের মধ্যে এইখানে দিনরাত বসে আছেন। আপনাদের কষ্ট আমি বুঝি। কিন্তু আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ফান্ডের ক্রাইসিস রয়েছে। আমরা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি সুযোগ বের করবো। নীতিমালা করে আপনাদের প্রতিষ্ঠানগুলো পর্যায়ক্রমে এমপিওভুক্ত করবো। আপনারা অনশন ভেঙে যার যার ঘরে ফিরে যান। তবে শিক্ষকরা তার সে আশ্বাস সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে দেন।
নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ বিনয় ভূষণ রায় জানান, কেবলমাত্র শিক্ষামন্ত্রীর মৌখিক আশ্বাসে এখনই তারা অনশন থেকে সরে আসছেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের অনুরোধ আপনি আমাদের ‘মা’। আমাদের রাস্তায় রেখে আপনি ঘুমাতে পারেন না। আপনি আমাদের জন্য কিছু বলুন। যাতে আমরা আশ্বস্ত হতে পারি। আমরা আমাদের সন্তানদের মাঝে ফিরতে পারি। স্কুলে গিয়ে আবারো পাঠদান করতে পারি।
বর্তমানে দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার। এর বাইরে স্বীকৃতি পেলেও নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৫ হাজার ২৪২ টি। যেগুলো এখনো সরকারের আর্থিক সুবিধার বাইরে রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কোন প্রকারের সুযোগ-সুবিধা ছাড়াই কাজ করে যাচ্ছেন প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী।
সারাবাংলা/এমএস/এমএ