বিএনপি নিজেরাই এখন তাদের নেত্রীকে মাইনাস করতে মাঠে নেমেছে
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৪:২৪
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টে শামিল হয়ে বিএনপি নিজেরাই এখন তাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার জন্য মাঠে নেমেছে। জনবিচ্ছিন্ন নেতাকে ভাড়া করা বিএনপির জন্য দুর্ভাগ্য বলে মন্তব্য করেছেন ১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে ১৪ দলের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
মোহাম্মদ নাসিম যুক্তফ্রন্টের জোটকে কাগুজে বাঘের সাথে তুলনা করে বলেন, বিএনপিকে এখন অন্য নেতৃত্ব ভাড়া করতে হচ্ছে। অন্য এক নেতাকে এনে তারাই তাদের দুই নেতাকে মাইনাস করার জন্য নিজেরাই মাঠে নেমেছে।
যুক্তফ্রন্টকে কোন ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান মোহাম্মদ নাসিম। এছাড়াও আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর মহানগর নাট্যমঞ্চে ১৪ দলের পক্ষে এক সমাবেশ করার কর্মসূচিও ঘোষণা করেন ক্ষমতাসীন জোটের মুখপাত্র নাসিম।
ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সমাবেশের সমালোচনা করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর মহানগর নাট্যমঞ্চে একটি নাটক অনুষ্ঠিত হয়েছে। যারা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে লালন করেছে, লালন করে যাচ্ছে এবং যারা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের সহায়তাকারী সমর্থনকারী; সেই বর্ণচোরা ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবরা সবাই একই মঞ্চে বসে নাটক করলেন।
নতুন ঐক্য আজকে আবার নতুন করে ডুবন্ত বিএনপিকে উদ্ধার করার জন্য মাঠে নেমেছে দাবি করে নাসিম বলেন, নাটক অনুষ্ঠিত হয়েছে, সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও খুনের হাওয়া ভবন নতুন করে বাংলাদেশে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য।
এই গণতন্ত্রের কথা বলেই কিন্তু ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টি করা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সেই কুশীলব ওই মঞ্চে উপস্থিত ছিল। এই সমস্ত লোককে মানুষে চেনে। মানুষ জানে। যারা ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টি করে মূলত শেখ হাসিনাকে মাইনাস করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম এবং শেখ হাসিনার সাহসের কারণে সেদিন তারা পরাস্ত হয়েছিল।
আবার যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে সফলতার সঙ্গে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্বে বাঙ্গালি জাতিকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পরিচিত করেছেন। তখন আবার ওই পরাজিত শক্তিরা কোন চক্রান্ত সফল করতে না পেরে আজকে আবার নতুন করে একই মঞ্চে বসেছে এবং তাদের চক্রান্তের মুখোশ উন্মোচন হয়ে গেছে।
ড. কামাল হোসেনের প্রতি ইঙ্গিত করে নাসিম বলেন, যিনি আইনের কথা বলেন। যিনি আইনের শাসনের কথা বলেন। তিনি আজকে আবার সেই দুর্নীতিবাজ ও ২১ আগস্টের হত্যাকারীদের প্রশ্রয়দাতাদের এই দেশের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। এদের উদ্দেশ্য জনগণ বোঝে এবং জানে।
ওয়ান ইলেভেনের আগেও কিন্ত এ ধরনের বুদ্ধিজীবী নাগরিক সমাবেশের নামে এই ধরনের নাটক করা হয়েছিল। একজন বিখ্যাত ব্যক্তির ইঙ্গিতে করা হয়েছিল। আমরা আবারও সেই চক্রান্তের অশুভ ইঙ্গিত দেখতে পাচ্ছি।
নির্বাচন যদি করতে চান, কোন অসুবিধা নাই। জোট করেই হোক, মহাজোট করেই হোক নির্বাচন করেন। নির্বাচনে জনগণ রায় দেবে। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে নতুন করে চক্রান্ত করবেন না। নতুন করে ফন্দি ফাঁতবেন না। এটা আমরা সহ্য করবো না।
শেখ হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশের প্রতি ইঞ্চি জমির মাঠে থেকে তাদের চক্রান্ত প্রতিহত করা হবে বলেও অঙ্গীকার করেন তিনি। এবিষয়ে তিনি আরও বলেন, কোন ছাড় দেওয়া হবে না। ২০১৪ সালের নির্বাচনে যেমন আমরা চক্রান্ত প্রতিহত করেছি এবারও ১৪ দল মাঠে ময়দানে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে লড়াই করে আমরা তাদের চক্রান্ত প্রতিহত করবো।
মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপি, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাসদের (একাংশ-ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরীন আকতার, জাসদ আরেক একাংশের শরীফ নুরুল আম্বিয়া, ওয়ার্কার্স পাটির পলিট ব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক অসিত বরণ রায়, গণতন্ত্রী পার্টির শাহাদাত হোসেন. তরিকত ফেডারেশনের নজিবুর বশর মাইজভান্ডারী, গণআজাদী লীগের এসকে শিকদার, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদসহ অন্যান্য শরিক জোটের নেতারা।
সারাবাংলা/এনআর/জেএএম