ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে আপত্তি নেই: ড. কামাল
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৬:২৫
।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।
ঢাকা: বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামো এবং ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে নীতিগতভাবে রাজি আছেন বলে জানিয়েছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। বিবিসি বাংলা অনলাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার অন্য শরিকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কোনো কথা হয়নি। এটি শুধুই তার দলের অবস্থান।
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনৈতিক জোট গঠনের মূল উদ্যোক্তাদের অন্যতম ড. কামাল হোসেন বলছেন, এটা একটা সিম্পল প্রভিশন। আমি মনে করি সবাই এটা বলতে দ্বিধা করবেন না। তবে এ রকম কোন সিদ্ধান্ত আমরা বসে নেইনি।
নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলনকারী বিএনপি যখন এই জোটে যোগ দিয়েছে, তখন বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামো এবং ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিতে নীতিগতভাবে রাজি থাকার বিষয়ে তিনি বলেছেন, এটি শুধু তার দলের অবস্থান। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নয়।
তিনি বলেছেন, বলা হচ্ছে- যেগুলো আইনে আছে, এগুলো তারা (ক্ষমতাসীন সরকার) মেনে চলবেন। যদি দেখা যায় যে, তারা এখান থেকে সরে যাচ্ছেন বা কোনো প্রভাব ফেলার চেষ্টা করছেন। তখন এটা দৃষ্টিতে এলে প্রথমত আপত্তি করা হবে যে, এটা থেকে আপনারা বিরত থাকেন। এরপরও অন্যপক্ষ যদি দেখেন যে রীতিনীতি না মেনে এটা করা হচ্ছে। তখন তো নির্বাচন বাতিল করার জন্য কোর্টে যেতে হবে।
কামাল হোসেন আরও বলেন, যারা সরকারে থাকবে, নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে তাদের দায়িত্ববোধ থাকতে হবে।
‘বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ যারা আছেন, তারা যখন একটা স্বাক্ষর করবেন যে, আমরা কেউ এখানে হস্তক্ষেপ করব না, আমরা এই প্রক্রিয়াকে একটা নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া হিসেবে হতে দেব, তখন আমরা ধরে নিতে পারি সরকারের পক্ষে বা আমাদের পক্ষে যারা ওথ (শপথ) নিয়ে কথাগুলো বলবেন, তাদের তো ন্যূনতম একটা দায়িত্ববোধ থাকবে।’
‘নির্বাচন কমিশন এটা রেফারি হিসেবে পরিচালনা করবে। কেউ যদি নিরপেক্ষতা থেকে সরে যায় তারা সেটা চিহ্নিত করবে এবং এটাকে অবৈধ বলবে। এগুলোতো ইলেকশন আইনেই আছে।’
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ব্যানারে শনিবার এ জোটের প্রথম যে সমাবেশ হয়, সেখান থেকে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয় এবং আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সে সব দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে জোটের সদস্য গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন জানান, তাদের এ জোট নির্বাচনী কোনো জোট নয়। একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি আদায়ের লক্ষ্যেই তারা শুধু একজোট হয়েছেন।
‘আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করার জোট। যে কারণে এটা দ্রুত করা সম্ভব হয়েছে।’
কিন্তু সরকারকে বিপদে ফেলে বিএনপিকে মাঠে নামার সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য এ জোট করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এমন সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কামাল হোসেন বলেছেন, ‘ওনাদের আশ্বস্ত করতে পারেন যে, এ রকম কোনো চিন্তা আমাদের মাথায় ছিল না। সুষ্ঠু নির্বাচন করার লক্ষ্যে এ জোট। সরকারও এই জোটে আসতে পারে।’
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কী ধরণের পূর্বশর্ত তারা সরকারকে দিচ্ছেন? এই প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘ভোটার লিস্ট নিরপেক্ষভাবে করতে হবে। ভোটার লিস্ট অনুযায়ী সবার ভোট দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।’
সারাবাংলা/এএস/জেডএফ