স্কুলে খাতির অবহেলা মাদরাসায়
২ জানুয়ারি ২০১৮ ১৪:১৭
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের মূল ফটকের পশ্চিম পাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্তির দাবিতে সপ্তাহ ধরে আমরণ অনশনে রয়েছেন নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। আর পূর্বপাশে বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকরা মাদরাসা জাতীয়করণের দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট করছেন। দুটি স্থান থেকেই মাইকে ভেসে আসছে বঞ্চিত শিক্ষকদের ক্ষুব্ধ কণ্ঠস্বর। তাদের দাবি প্রায় অভিন্ন হলেও নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের প্রতি সরকারের খাতির থাকলেও মাদরাসার শিক্ষকরা থাকলেন অস্পৃশ্য হয়ে। তাদের কাছে না যায় মিডিয়া, না যাচ্ছেন সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি।
মঙ্গলবার সকালে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ হাজির হয়ে অনশনরত শিক্ষকদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন। এসময় এমপিওভুক্তির আশ্বাসও দেন আন্দোলনরত শিক্ষকদের। যদিও তার সে আশ্বাস প্রত্যাখ্যান করেন শিক্ষকরা। তবে পাশে আন্দোলনরত মাদরাসা শিক্ষকদের কাছে তিনি যাননি। এমনকি তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলেনওনি তিনি।
টানা আটদিন ধরে চলা শিক্ষকদের অনশনের খবর প্রতিদিনই গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করে আসছে দেশের মিডিয়াগুলো। বিশেষ করে মঙ্গলবার সকালে শিক্ষামন্ত্রী যখন প্রেস ক্লাব এলাকায় যান তখনো মিডিয়ার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু মাদরাসা শিক্ষকদের আন্দোলন কভার করতে সেভাবে কোনো মিডিয়ার উপস্থিতি চোখে পড়েনি।
এসময় সারাবাংলার প্রতিনিধিকে পেয়ে নিজেদের প্রতি এমন বৈষম্যমূলক আচরণে হতাশা প্রকাশ করেন মাদরাসা শিক্ষকরা। পটুয়াখালীর বাউফলের সূর্যমুনী হামিদিয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, আজ দুদিন হলো তারা এখানে আন্দোলন করছেন। রাতে এই ফুটপাতেই ঘুমাচ্ছেন। অনেক শীত, মশার উপদ্রব। খাওয়া দাওয়ার কষ্ট। শিক্ষামন্ত্রী পাশে শিক্ষকদের সান্ত্বনা দিতে এসেছেন। অথচ আমাদের প্রতি তার কোনো দৃষ্টিই নেই। একদেশে দুই রকম নীতি চলছে। আমরা কি এদেশের নাগরিক না?
রাজবাড়ির কাওরিয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার প্রধান শিক্ষক লুৎফুর রহমান বলেন, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকরা ৩২ বছর ধরে বেতন পান না। এরশাদ সরকারের আমলে আমরা দুই বছর বেতন পেয়েছিলাম। তারপর কোনো সরকারই আমাদের বেতন দেয় নাই। আমরা তো এদেশেরই নাগরিক, এদেশের সন্তানদেরই তো আমরা শিক্ষা দেই। প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকদের সরকার অনেক টাকা বেতন দেয়, অথচ আমাদেরকে সরকার জাতীয়করণই করে না। ‘আমরা বুঝি না এটা কি মাদরাসা শিক্ষার প্রতি সরকারের অবহেলা নাকি অক্ষমতা। সরকার হয়তো চায় না মাদরাসা শিক্ষা উঠে আসুক।’
সারাবাংলা/এমএস/এমএ