Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলাদেশি অভিবাসীরা ‘উইপোকা’, তাড়িয়ে দেওয়া হবে: অমিত শাহ


২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৮:৪৭

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

ভারতে বসবাসকারী কথিত বাংলাদেশি অভিবাসীদের ‘উইপোকা’ বলে আক্রমণ করেছেন ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ।

শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজস্থানের গঙ্গাপুরে এক জনসভায় তিনি বাংলাদেশি অভিবাসীদের ‘দীমক’ বা উইপোকার সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ‘এরা ভারতীয় যুবকদের রুটিরুজি বা চাকরি কেড়ে নিচ্ছে, গরিবের খাবারে ভাগ বসাচ্ছে। আমি আজই ঘোষণা করছি, আগামী বছর মোদি সরকার ক্ষমতায় এলে এদের প্রত্যেককে বেছে বেছে ভোটার তালিকা থেকে বের করে দেওয়া হবে।’

এতেই ক্ষান্ত হননি উগ্রবাদী ও ধর্মান্ধ এই রাজনীতিবিদ। রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানে অপর এক সভায় উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দেন, দিল্লিতে অবৈধ অভিবাসীদের জন্য আপনারা বিরক্ত, নাকি না? তাদেরকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া উচিত কি না?

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে এক শত কোটি অনুপ্রবেশকারী প্রবেশ করেছে। তারা উইপোকার মতো আমাদের দেশটাকে খেয়ে ফেলছে। তাদেরকে আমরা বের করে দেবো কি না?

এ মাসের শুরুতেই বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব বলেন, ‘তিন ‘ডি’র ভিত্তিতে ভারতে বসবাস করে আসা অবৈধ অভিবাসীদের ভাগ্য নির্ধারিত হবে। অর্থাৎ অবৈধ বিদেশিদের শনাক্ত (ডিটেক্ট) করে ভোটার তালিকাসহ অন্যান্য সেবা তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া (ডিলিট) হবে। এরপর তাদের ভারত থেকে বিতাড়ন (ডিপোর্টেশন) করা হবে।

রাম মাধব সেসময় ঘোষণা করেছিলেন, আসামের নাগরিক তালিকা থেকে যাদের নাম বাদ পড়বে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোই তাদের দলের নীতি।

এরও প্রায় সাড়ে চার বছর আগে ভারতে ভোটের প্রচারে নেমে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছিলেন, ক্ষমতায় এলে তার সরকার অবৈধ বাংলাদেশীদের লোটাকম্বল নিয়ে ফেরত পাঠাবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে দেশটির বিরোধী দলগুলো বলছে, লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এই অবৈধ বিদেশীদের ইস্যু খুঁচিয়ে তুলতে চাইছে বিজেপি। যদিও এ ধরণের অভিযোগ আমলে নিচ্ছে না দলটির নেতারা।

বিজেপির পলিসি রিসার্চ সেলের অনির্বাণ গাঙ্গুলির মতে, প্রথম কথা হল বাংলাদেশকে স্বীকার করতে হবে যে এই সমস্যাটা আছে। সে দেশের বুদ্ধিজীবী বা সুশীল সমাজ এই জিনিসগুলো ঠিকই বোঝেন, আবার তাদের অনেকে বিষয়টা ঢাকারও চেষ্টা করেন। তারা এমন ভাব করেন যেন এই সমস্যাটার কোনো অস্তিত্বই নেই!

‘এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই কূটনৈতিকভাবে আরও ভাল বোঝাপড়ার মাধ্যমে, সংলাপের মাধ্যমে- সহযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিষয়টাকে দেখতে হবে। দীর্ঘমেয়াদে কীভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে এই সমস্যাটার মোকাবিলা করা যায় সেটা ভাবতে হবে।’

তিনি বলেন, কিন্তু তার আগে আমরা তো হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারি না, আইনগতভাবে যা করার তা আমাদের করতে হবে। কারণ আসামে একটার পর একটা জেলার ডেমোগ্রাফি ক্রমশ বদলে যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গও সেই একই রাস্তায় হাঁটছে!

এদিকে সোমবার ইন্ডিয়া ডটকম নামে দেশটির এক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, অমিত শাহের এই ধরণের অমানবিক কথাবার্তাকে ‘অযাচিত মন্তব্য’ হিসেবে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ব্যাপারে অমিত শাহের কোনো মন্তব্যই গ্রহণযোগ্য নয়।

ইন্ডিয়া ডটকম বলছে, অমিত শাহের এই নেতিবাচক কথার আক্রমণ কখনোই ভারত সরকারের মতামতকে নির্দেশ করে না বলে জানিয়েছেন ইনু। তার জন্য ভারত সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং রয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এএস

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর