চলতি বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭.৫%, পূর্বাভাস এডিবির
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১১:৪১
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা : চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। যা গত অর্থবছরে অর্জিত হয়েছে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) আউট লুক-২০১৮ আপডেট প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন, এডিবির সিনিয়র ইকোনমিস্ট সুং চ্যান হু এবং প্রিন্সিপাল কান্ট্রি স্পেশালিষ্ট জয়তসানা ভারমা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছর রপ্তানির অবস্থা স্থিতিশীল থাকবে। তবে আমদানির গতি ধীর হবে। এছাড়া শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিক ও স্থিতিশীলতায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, সেটি বেড়ে গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে হয়েছে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরেও মূল্যস্ফীতি চাপে থাকবে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, টাকার অবমূল্যায়ন, সেবার মূল্যবৃদ্ধি এবং শস্যের উৎপাদন হ্রাসের কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দাম বেড়ে যাওয়া।
প্রতিবেদনে অর্থনীতিতে চার ধরনের ঝুঁকির কথা বলা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে আমদানি চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা, মেগা প্রকল্পগুলোতে চাহিদা মতো অর্থায়ন সরবরাহ করতে না পারা, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি এবং প্রতিকূল আবহাওয়া। এসব কারণে দেশের অর্থনীতি ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
জাতীয় নির্বাচন দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেন, নির্বাচন যেকোনো দেশের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে, বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য জনগণ ব্যাপক আগ্রহী হয়ে আছে। তাছাড়া দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল রয়েছে। তাই নির্বাচন অর্থনীতিতে তেমন প্রভাব ফেলতে পারবে না।
এতে আরও বলা হয়েছে, গত অর্থবছর কৃষিখাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ। যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩ শতাংশের তুলনায় অনেক ভাল। এটি হয়েছে মূলত শস্য উৎপাদন খুব ভাল হয়েছে। শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি ১২ দশমিক ১ শতাংশ, যা তার আগের অর্থবছরের ১০ দশমিক ২ শতাংশের তুলনায় বেশি। এক্ষেত্রে আবাসন খাতে বিনিয়োগ বাড়ায় প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ, যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ ছিল। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার কারণ গুলো হচ্ছে, যানবাহন, আর্থিক সেবা, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতের প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া।
কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেন, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি অনেক ভাল। গত তিন বছর ধারাবাহিকভাবে ৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হচ্ছে। যা বর্তমানে ৮ শতাংশের কাছাকাছি। এই ধরাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে বিচক্ষণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক পলিসি গ্রহণ, সুষ্ঠু ঋণ ব্যবস্থাপনা, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং নতুন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বাংলাদেশ বর্তমানে অনুদান প্রাপ্ত দেশের তালিকায় না থাকলেও রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য ইতোমধ্যেই ১০ কোটি ডলার অনুদান দেয়া হয়েছে। এই অর্থে যেসব প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে সেগুলোর ভাল এবং সঠিক বাস্তবায়ন হলে আরও ১০ কোটি ডলার দেয়া হবে।
সারাবাংলা/জেজে/জেএএম