Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সহিংসতা উসকে দিচ্ছে আওয়ামী লীগ


২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৩:২৮

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: বিএনপির জনসভা সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সহিংসতা উসকে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (২৬ সেপ্টম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনের আগে বৃহত্তর ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে যৌথসভা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করবে বিএনপি। এই জনসভা প্রসঙ্গে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহম্মদ নাসিম বলেন, ‘ওই অপশক্তি যেন মাঠে নামতে না পারে। ওদের মাঠে প্রতিহত করবেন, রাস্তায় প্রতিহত করবেন।’ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘বিএনপি দেখলেই ঠ্যাং ভেঙে দেওয়া হবে।’

আওয়ামী লীগ নেতাদের এসব হুমকি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর আমরা একটি জনসভা আয়োজন করছি। এই জনসভার বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আমরা আশা করছি শান্তিপূর্ণ ও সফল একটা জনসভা হবে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, এই জনসভাকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এবং মন্ত্রীগণ বিভিন্ন রকম কথা বলছেন।’

‘নাসিম সাহেব (মোহম্মদ নাসিম) বলছেন তার সভায়, রাজপথে, গলিতে বিএনপিকে যেখানে পাবা, সেখানে আটকে দাও। সেখান থেকে যেন বিএনপি বেরিয়ে আসতে না পারে। নানক সাহেব (জাহাঙ্গীর কবির নানক) বলছেন হাত পা ভেঙে দাও— এই তো হচ্ছে তাদের ভাষা, গণতন্ত্রের ভাষা! জনগণ বিবেচনা করবে সংঘাত-সহিংসতা কারা শুরু করে। ২৭ অক্টোবরে ২০০৬ সালে কারা লঘি বৈঠা দিয়ে ২৭ জন তরুণকে হত্যা করেছিল?’— প্রশ্ন ফখরুলের।

বিজ্ঞাপন

যৌথ সভায় আলোচনা হওয়া বিষয়গুলো তুলে ধরে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে যে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে এবং আইনগতভাবে জামিন পাওয়ার পরও তাকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না— এ বিষয়গুলো এখানে আলোচনা হয়েছে এবং অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

‘একই সঙ্গে কারাগারে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার দাবি জানানো হয়েছে’— জানান মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘আগামী ১০ অক্টোবর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় দেওয়া হবে। এই রায় নিয়ে অনেক কথা-বার্তা শোনা যাচ্ছে। আমরা বলেছি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং আমাদের দলের বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে এর সঙ্গে জড়ানো হয়েছে এবং তাদেরকে সাজা দেওয়ার হীন চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’

‘আজকের যৌথসভায় এ ঘৃণ অপচেষ্টার নিন্দা জানানো হয়েছে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘সারাদেশে গায়েবি মামলার উৎসব চলছে। বাংলাদেশে বিএনপির এমন একটা ইউনিট নেই যেখানে বিএনপির সভাপতি থেকে শুরু করে সর্বশেষ সদস্য পর্যন্ত আসামি করা হয়েছে। আমাদের হিসাব মতে এখন পর্যন্ত নাম দিয়ে আসামি করা হয়েছে সোয়া ৩ লাখের ওপরে নেতাকর্মীকে। এ থেকে স্পষ্ট সরকার যেসব কথা মুখে বলছে, সেগুলো জনগণের সঙ্গে প্রতারণা।’

‘প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গিয়েও বলছেন, সব দল অংশগ্রহণ করুক, সেটা চায় তার সরকার। তার নমুনা হচ্ছে, তিন লাখ লোকের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা করা, দেশের সবচেয়ে বড় দল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারবন্দি করে রাখা।, তার নমুনা হচ্ছে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে আরেকটি মামলায় সাজা দেওয়ার চেষ্টা করা। এই বিষয়গুলোর ব্যাপারে আজকের যৌথসভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়ে এবং এর নিন্দা জানানো হয়’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুল মালেক, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, ঢাকা জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি নাজিম উদ্দীন, জাসাসের সাধারণ সম্পাদক হেলাল খান, ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী এবং আরও অনেকে।

সারাবাংলা/এজেড/এটি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর