জাকিয়া আহমেদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ তলার শিশু ওয়ার্ডের দেয়াল জুড়ে লেখা বিভিন্ন বাণী, কার্টুন আর চমৎকার সব ছবি। ছাদের দেয়াল থেকে ঝুলছে বিভিন্ন ধরনের খেলনা।
নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে শিশু ওয়ার্ডের পরিবেশটাই বদলে গিয়েছে। ক্যানোলা লাগানো হাতের ব্যথায় কাঁদতে কাঁদতে থাকা শিশুটি হঠাৎ করেই ছাদের খেলনার দিকে তাকিয়ে হেসে উঠছে,সেই সে দৃশ্য দেখে হাসছেন মা।
নতুন বছরের উপহার পেয়ে দারুণ খুশি ছিল কুষ্টিয়া থেকে আসা নেফ্রোটিক সিনেড্রোমের রোগী ৭ বছরের তানিশা। তানিশার মা আয়েশা সুলতানা বলেন, অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকার মত কষ্ট আর হয় না। সারাদিন মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি। এখানে আসার পর থেকে আজকের মত হাসি ওর মুখে দেখিনি। সন্ধানীর ছেলেমেয়েদের দেওয়া আজকের উপহারে এই ওয়ার্ডের প্রতিটি বাচ্চা খুব খুশি বলেন আয়েশা সুলতানা।
নতুন বছর উপলক্ষে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বাচ্চাদের জন্য নতুন কিছু করার চিন্তা থেকেই এগিয়ে এসেছে সন্ধানী ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ইউনিট। হাসপাতালে ভর্তি থাকা অসুস্থ শিশুদের ওয়ার্ড শিশুবান্ধব করার জন্যই আমাদের এ উদ্যোগ বলেন, সন্ধানীর সভাপতি মো. মনিরুল ইসলাম।
সারাবাংলাকে তিনি বলেন, হাসপাতালে ভর্তি শিশুরা শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকার কারণে মানসিকভাবে বিমর্ষ থাকে। অথচ শিশুরা যদি আনন্দে থাকে তাহলে তাদের চিকিৎসা করতেও চিকিৎসকদের বেগ পেতে হয় না।
আমাদের ধারণা হাসপাতালে থাকা সময়টুকু যদি আমরা আনন্দময় করতে পারি,তাহলে তাহলে সেটা ওদের সুস্থ হয়ে ওঠার পথেও ভুমিকা রাখবে।
মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের এ ধরনের কার্যক্রম ভবিষ্যতেও আমরা অব্যাহত রাখবো বলেই আশা করি।
বছরের প্রথম দিনে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এস এম খবিরুল ইসলাম, হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. অলক কুমারসহ অন্যরা এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
সঙ্গে ছিলেন সন্ধানী ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ইউনিটের সাবেক সভাপতিও বর্তমান কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি কামাল আহমেদ, সভাপতি মো. মনিরুল ইসলামসহ অন্যরা।
খবিরুল ইসলাম বলেন, পুরো পরিবেশটাই বদলে গিয়েছে সন্ধানীর এ উদ্যোগে। শিশু ওয়ার্ডের খেলনা, কার্টুন শিশুদের মন ভালো করেছে। এটা আমাদের চিকিৎসকদের জন্য খুব উপকার হলো।
শিশুদের ওয়ার্ডদুটিকে নতুন করে সাজানো প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিশু বিভাগের প্রধান ডা. অলক কুমার সাহা বলেন, ছোট ছোট বাচ্চাগুলো যখনঅসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসে তখন ওরা একটা ভীতিকর অবস্থায় থাকে।
ওয়ার্ড জুড়ে বিভিন্ন খেলনা এবং দেয়ালে এসব শিশুতোষ ছবি থাকায় বাচ্চাদের ভয় কেটে যাবে এবং চিকিৎসা করতে সুবিধা হবে।
সারাবাংলা/জেএ/একে