Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি পেল ভারতীয় নারীরা


২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২১:১০

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

ঢাকা: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র স্থান সবরীমালা মন্দিরে প্রবেশে নারীদের যেন বাধা দেওয়া না হয়- এমন রুল দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিমকোর্ট। কেরালার এই মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার পর থেকে নারীদের ‘অপবিত্র’ বিবেচনা করা হতো, যে কারণে তাদের মন্দিরে প্রবেশ এবং ধর্মীয় আচার পালনের অধিকার ছিল না এতদিন।

লিঙ্গ বৈষম্য দূর করার প্রশ্নে দায়ের করা এক পিটিশানের পর আদালত এই রুল দেন। প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ সবরীমালা মন্দিরে যান।

প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রা রুলে বলেন, ধর্ম হলো একজন মানুষের সম্মান এবং পরিচয়। তাই ধর্ম পালনের অধিকার নারী এবং পুরুষ উভয়েরই রয়েছে। অবসরে যাওয়ার আগে দীপক মিশ্রা সম্প্রতি কয়েকটি ঐতিহাসিক অসাম্প্রদায়িক আদেশ দিয়েছেন। এর মধ্যে পরকীয়া এবং সমকামীদের বিষয়ে রায় বিশেষভাবে আলোচনায় আসে।

এই বেঞ্চে একমাত্র নারী বিচারক ছিলেন ইন্দু মালহোত্রা। রায়ের বিপরীতে মন্তব্য করে তিনি বলেন, গভীরতার ভিত্তিতে যে কোনো ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পর্কে সাধারণভাবে হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার আদালতের নেই।

শতাব্দি পর শতাব্দি নারীদের অপবিত্র বিবেচনা করে মন্দির এবং মঠের বাইরে রাখার প্রথা চলে আসছিল। গত কয়েক বছরে প্রথম নারীরা এর প্রতিবাদে আওয়াজ তোলে। তবে হঠাৎ এই রায় আসেনি। বিচারপতি দীপক মিশ্রা নারীদের মন্দির-মঠের বাইরে রাখার চার্চার যৌক্তিকতা নিয়ে আগে থেকেই প্রশ্ন তুলে আসছিলেন। তিনি বলেন, ভগবান যখন বৈষম্য করেননি, তখন আমরা বৈষম্য সৃষ্টি করা কে?

গত দুই বছরে ভারতের আদালত শনি শিংনাপুর মন্দির এবং হাজি আলী মসজিদ নারীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। তিন বছর আগে সবরীমালা মন্দিরের প্রধান বলেন, আমি নারীদের প্রবেশের অনুমতি দেবো- যদি এমন কোনো যন্ত্র স্থাপন করা যায়, যাতে শনাক্ত করা যাবে যিনি মন্দিরে প্রবেশ করছেন তার ঋতুস্রাব হয়নি। এই কথার জবাবে আদালত বলেন, আমাদের কোনো স্ক্যানার দরকার নেই।

বিজ্ঞাপন

কেরালার রাজ্য সরকারও ২০১৬ সালে মন্দিরে নারীদের প্রবেশের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছিল। প্রথম যখন নারীদের পক্ষ থেকে এই দাবি ওঠে। জুলাই মাসের শুনানিতে পিটিশনের পক্ষের আইনজীবী বলেন, ভারতের সংবিধান এই বৈষম্য সমর্থন করে না। এটা নারীদের অধিকার হরণ। বিরোধী পক্ষ বলেন, শতবর্ষ ধরে এই প্রথা চলে আসছে, এর পরিবর্তন দরকার নেই। ২০১৬ সালে ছাত্রীরা মন্দিরের সামনে জড়ো হয়ে প্রথম প্রতিবাদ করে। তাদের মধ্যে এক ছাত্রী ফেসবুকে #হ্যাপিটুব্লিড ক্যাম্পেইন শুরু করেন। তাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমর্থন আসতে থাকে।

আদালতের রায়ের পর এটি ভারতের তৃতীয় ধর্মীয় উপাসনালয় যেখানে নারীরা প্রবেশের অনুমতি পেল।

সারাবাংলা/এটি

মন্দির

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর