নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই : ইসি সচিব
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৪:৩৩
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব এবং বাকি চার নির্বাচন কমিশনারের মধ্যে কোনো বিরোধ দেখছেন না ইসি সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ।
সিইসি ও ইসি সচিবের সঙ্গে বাকি চার নির্বাচন কমিশানের মতবিরোধ রয়েছেন— গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবরের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে এমন কথা জানান ইসি সচিব।
শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের লাভ লেনে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভার শেষে এ কথা বলেন ইসি সচিব। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলের সব নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে মতবিনিময় তিনি।
সভা শেষে গত বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে প্রকাশিত সিইসি-ইসি সচিবের সঙ্গে চার কমিশনারের মতবিরোধ বিষয়ক সংবাদের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় ইসি সচিবের কাছে। জবাবে হেলালুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সেরকম বিরোধ দেখছি না। মাননীয় নির্বাচন কমিশনাররা মনে করছেন যে অনেক বিষয় সম্পর্কে তারা অবহিত হচ্ছেন না। তারা যেন সব বিষয়ে অবহিত থাকেন সেই দাবি জানিয়েছেন। তাই এখন তাদের সব বিষয়ে অবহিত করা হচ্ছে।’
সভা শেষে সচিবের কাছে জানতে চাওয়া হয়, যেসব দল নির্বাচনে আসতে আগ্রহী নয়, সেসব দলকে নির্বাচনে আনার ক্ষেত্রে কমিশন কোনো উদ্যোগ নেবে কি না। জবাবে সচিব বলেন, ‘বিশেষ কোনো উদ্যোগ নির্বোচন কমিশন আর নেবে না। এর আগেও আমরা তাদের সঙ্গে সভা করেছি। সেখানে তাদের নির্বাচনে অংশ নিতে অনুরোধ করা হয়েছিল। আশা করছি, সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেবে এবং একটি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে।’
নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি তফসিল ঘোষণার পরে নির্বাচন কমিশন বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানান ইসি সচিব।
এদিকে, মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে নিজের বক্তব্যে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আ ন ম মুনির হোসাইন খান বলেন, আগামী নির্বাচন খুব ঝুঁকিপূর্ণ হবে। সে কারণে কেন্দ্র থেকে যেন কমিশনে সরাসরি ফলাফল পাঠানো যায়, সে ব্যবস্থা নিতে তিনি নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানান।
জবাবে সভায় সচিব জানান, সারাদেশে মোট ভোটকেন্দ্র ৪০ হাজার ১৯৯টি। এসব কেন্দ্রের সবগুলোকে ট্যাব (ট্যাবলেট পিসি) পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে সরাসরি ফল পাঠানো যায় কি না, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।
সভা শেষে এই ঝুঁকির প্রসঙ্গে জানতে চান সাংবাদিকরা। সচিব বলেন, নির্বাচনে কোনো ঝুঁকি দেখছেন না তিনি। তবে ঝুঁকি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নির্বাচন কমিশনের আছে বলেও জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নির্বাচনের ৮০ ভাগ প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর বাকি প্রস্তুতি শেষ হবে। তবে কবে নির্বাচন হতে পারে, তা নিয়ে কিছু বলেননি তিনি। সচিব জানান, তফসিল ঘোষণার পর সিইসিসহ সব কমিশনাররা বিভাগগুলো পরিদর্শন করে সেখানে প্রযোজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন এবং সমন্বয় সভা করবেন।
এছাড়া নির্বাচন পরিচালনার জন্য কারও সঙ্গে শত্রুতা বা বৈরিতা নয় বরং মিলেমিশে নির্বাচন পরিচালনা করতে নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন ইসি সচিব। তিনি জানান, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে এই নির্বাচনে প্রাইমারি, এমপিওভুক্ত ও সরাকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা কাজ করবেন। সেইসঙ্গে থাকবেন বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
এ প্রসঙ্গে গ্রামীণ ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তাদের নিয়ে বিতর্ক রয়েছে জানতে চাইলে সচিব বলেন, আপাতত এদের নাম তালিকায় রয়েছে। তবে কোনো বিতর্ক থাকলে তা পরে পর্যালোচনা করা হবে।
মতনিবিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।
সারাবাংলা/আরডি/এসএমএন/টিআর