‘দুই স্ত্রীর ঝগড়া থামাতে ব্যর্থ হয়ে প্রথম স্ত্রীকে খুন’
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২০:০৬
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: গত ৩ আগস্ট নগরীর নতুন ফিসারিঘাট এলাকায় ব্রিজের নিচে চাক্তাই খাল থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর দুই মাস পর মূল ঘটনা সামনে এসেছে পুলিশের তদন্তে। হত্যার অভিযোগে ওই নারীর স্বামী সুমন দে-কে (৩৩) গ্রেফতারও করা হয়েছে।
আদালতে সুমনের দেওয়া জবানবন্দির পর পুলিশ জানিয়েছে, দুই স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া থামাতে ব্যর্থ হয়ে সুমন তার প্রথম স্ত্রীর মাথায় আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর জখম হন। এরপর দ্বিতীয় স্ত্রীসহ শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মরদেহ চাক্তাই খালে ফেলে দেন।
শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) হত্যার দায় স্বীকার করে সুমন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এর আগে চট্টগ্রাম নগরীর পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন থেকে গতকাল (শুক্রবার) রাতে সুমনকে গ্রেফতার করে বাকলিয়া থানা পুলিশ।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী জানিয়েছেন, সুমনের দ্বিতীয় স্ত্রী চুমকি দাশ এখনও পলাতক।
সুমন ফিসারিঘাট এলাকায় একটি মাছের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। তার বাসা ছিল ওই এলাকার বেড়া মার্কেটে।
সূত্র জানায়, সাত বছর আগে সুমন ধর্মান্তরিত হয়ে জোসনা আক্তারকে (২৪) বিয়ে করে। এরপর গত বছরের নভেম্বর মাসে গোপনে চুমকিকে বিয়ে করে।
প্রণব চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, মৃত্যুর মাস তিনেক আগে সুমনের সঙ্গে চুমকির বিয়ের বিষয়টি জোসনা জেনে ফেলেন। চুমকিকে মেনে নিয়ে তারা একসঙ্গে বসবাসও শুরু করেন। বিয়ের আগে থেকেই চুমকি গোপনে পতিতাবৃত্তিতে জড়িত ছিল। একপর্যায়ে চুমকি জোসনাকেও পতিতাবৃত্তিতে জড়িয়ে ফেলে। বিষয়টি নিয়ে চুমকি ও জোসনার মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হলে সুমন জেনে যান। গত ১ আগস্ট দুই স্ত্রী ঝগড়া শুরু হলে সুমন থামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এরপর জোসনাকে কাঠ দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এতে জোসনা জ্ঞান হারান। তখন জোসনার মৃত্যু নিশ্চিত করতে মুখে বালিশ চেপে ধরেন চুমকি। মৃত্যুর পর সুমন ও চুমকি মিলে জোসনাকে বস্তায় ভরে ফিরিঙ্গিবাজার ব্রিজের নিচে খালে ফেলে দেন। ৩ আগস্ট জোসনার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ অনেকটা পচে গিয়েছিল।
তদন্তে নেমে পুলিশ জোসনার নাম-পরিচয় জানতে পারে। আমাদের কাছে তথ্য আসে সুমন ও চুমকি পালিয়ে নগরীর কোতোয়ালি থানার জামতলা বস্তিতে একটি বাসায় আত্মগোপন করে আছে। সেই অনুযায়ী অভিযান চালানো হয়, বলেন প্রণব চৌধুরী।
সারাবাংলা/আরডি/এটি