কোটা নিয়ে সচিব কমিটির ‘ঘরোয়া রিপোর্ট’ প্রত্যাহারের দাবি
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৪:৩২
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: কোটা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে ১৬৩ বছরের পরীক্ষিত কোটা প্রথা বাদ দেওয়ার সুপারিশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ‘মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড’ এবং ‘লিবারেশন ওয়ার ফোর্সেস রিসার্চ ফাউন্ডেশন’।
রবিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন, ‘গত ১৭ সেপ্টেম্বর কোটা বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি সংশ্লিষ্ট কোটা সুবিধাভোগীদের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের, এমন কি সাধারণ মানুষের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে মতবিনিময় না করে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পদে কোটা প্রথা বাদ দেওয়ার পক্ষে সুপারিশ করেছেন। সঙ্গত কারণে আমরা এই সুপারিশের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ঘরোয়া রিপোর্ট প্রত্যাহারের দাবি জানাই।’
মেহেদী হাসান আরও বলেন, ‘১৯৭৫ এর পট পরিবর্তনের পর ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২২ বছর কোনও কোটা দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র ১৯৮২ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ৩.০৯ শতাংশ কোটা দেওয়া হয়েছে। যদি ওই সময়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটা প্রাপ্যমত দেওয়া হতো তাহলে মুক্তিযোদ্ধারা এবং তাদের সন্তানরা এতো পিছিয়ে পড়তো না। ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সামরিক শাসন আমলে যেসব আদেশ নির্দেশ আইন করা হয়েছে তা বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।’
‘তাই আমরা বলতে চাই, ১৯৭৬ এবং ১৯৮৫ সালে ২০ শতাংশ ও ৫ শতাংশ জেলা কোটা কমানো সংবিধানের (অনুচ্ছেদ-১০) পরিপন্থী। এই অবস্থায় আমরা বঙ্গবন্ধুর সরকার ঘোষিত ১৯৭২ সালের ৮০ শতাংশ জেলা কোটা প্রবর্তনের দাবি জানাই’, যোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে নারী কোটা বাতিলের মতো আর্থ সামাজিক অবস্থা তৈরি হয়নি। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) একাধিক বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে নারী কোটার প্রয়োজনীয়তার চিত্র পাওয়া গেছে। বিসিএস পরীক্ষার আবেদনে নারীদের অংশগ্রহণ আগের চেয়ে বাড়লেও চাকরি পাওয়ার হার ধারাবাহিকভাবে কমছে। ৩৩তম বিসিএস থেকে বিগত ৪টি বিসিএস এ দেখা গেছে, নারীদের চাকরি পাওয়ার হার ৩৮.২৬ শতাংশ থেকে নেমে ২৬.২২ শতাংশে এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে নারী কোটা বাতিল হয়ে গেলে নারীদের আরও পিছিয়ে পরার আশঙ্কা রয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- লিবারেশন ওয়ার ফোর্সেস রিসার্চ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক বিচারপতি মুনসুরুল হক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের (বোয়াফ) সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময় প্রমুখ।
সারাবাংলা/এমএমএইচ/এমও