দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পার হচ্ছে জবি শিক্ষার্থীরা
২ অক্টোবর ২০১৮ ০৮:৪৭
।। জগেশ রায়, জবি করেসপন্ডেন্ট ।।
পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নিজস্ব আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় এর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সবাইকেই যাতায়াত করতে হয় ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে। আর তাদের প্রত্যেকের জন্যই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাতায়াতের পথ একটিই। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সেই গেটটির সামনেই বাহাদুর শাহ পার্ক, যাকে ঘিরে রয়েছে সদরঘাট যাতায়াত করা ব্যস্ততম সড়ক। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকলেও প্রতিমুহূর্তে বাস, প্রাইভেট কারসহ লেগুনা, রিকশা, মোটরসাইকেলের চলাচলের পথ দিয়েই ক্যাম্পাসে ঢুকতে হয় জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। জবি প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। শিক্ষার্থীরা বারবার প্রধান গেটের সামনে গতিরোধক স্থাপনের দাবি জানালেও সে দাবি পূরণেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, নিজস্ব কোনো আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় বাংলাবাজার ও এর আশপাশের এলাকাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষক-শিক্ষার্থী বসবাস করেন। কেউ বাসা ভাড়া নিয়ে, কেউ মেস করে থাকেন। এছাড়া, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকেও ক্যাম্পাসে আসেন শিক্ষার্থীরা। তাদের প্রত্যেকের জন্যই ক্যাম্পাসে প্রবেশের পথ একটিই।
সরেজমিনে দেখা যায়, জবি প্রধান গেটের সামনের ব্যস্ততম রাস্তায় শিক্ষার্থীরা দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন। লেগুনা, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, রিকশাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন পেরিয়েই তাদের ঢুকতে হচ্ছে ক্যাম্পাসে। গেটের সামনে জেব্রা ক্রসিং বা কোনো ধরনের গতিরোধক না থাকায় এসব যানবাহনের গতি সীমিত করার কোনো প্রবণতাই নেই। ফলে রাস্তা পারাপারের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের জন্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের তানজিনা জামান সারাবাংলাকে বলেন, রাস্তা পারাপারের সময় মাঝে মাঝে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। লেগুনা আর রিকশার গতি দেখে রাস্তা পার হতেই ভয় লাগে। ভয়ে ভয়ে রাস্তা পার হই। কখন কোন গাড়ি এসে গায়ের ওপরে উঠে পড়ে, সেই দুশ্চিন্তা নিয়েই রাস্তা পার হতে হয়।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের রুবেল ইসলাম বলেন, রাস্তা পারাপারের সময় রিকশার সঙ্গে ধাক্কা লাগা তো নিয়মিত ঘটনা। প্রতিদিনই কোনো না কোনো শিক্ষার্থী ব্যাথা পাচ্ছেন। আমরা দীর্ঘদিন ধরে একটি গতিরোধকের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু প্রশাসন নির্বিকার। তারা চাইলেই কিন্তু গতিরোধক তৈরি করে দিতে পারে। আমরাও খানিকটা নিশ্চিন্ত হতে পারি।
এ বিষয়ে জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, সদরঘাট যাওয়ার প্রধান রাস্তা হওয়ায় এখান দিয়ে সবসময় দ্রুত গতিতে গাড়ি চলাচল করে। এ বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা বলেছি। গেটের সামনে ট্রাফিক পুলিশ দিতে কোতোয়ালি থানায়ও কথা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বা পুলিশ— কেউই কোনো ব্যবস্থা এখনও নেয়নি। এ বিষয়ে দ্রুতই জবি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনের এমন ঝুঁকির বিষয়ে জানতে চাইলে জবি প্রক্টর নূর মোহাম্মদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে এ সপ্তাহেই রেজিস্ট্রার মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করব। এরপর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গেও আমরা আলোচনা করব। আলোচনার ভিত্তিতে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নোবো।’ দ্রুতই এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদক্ষেপ দৃশ্যমান হবে বলে আশাবাদ জানান তিনি।
সারাবাংলা/জেআর/টিআর