‘হাতিরঝিল থানায় মামলা ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ’
২ অক্টোবর ২০১৮ ১২:০৯
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় ‘গায়েবি মামলা’ ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার (২ অক্টোবর) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, ‘সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠেছে। নির্বাচন সামনে রেখে বিরোধী মত শূন্য করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে তারা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নামে হাতিরঝিল থানায় মামলা সেটারই বহিঃপ্রকাশ।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী সরকার আর কোনভাবে বিরোধী দলের অস্তিত্ব মানতে পারছে না। তারা এখন ফ্যাসিবাদের উত্তুঙ্গ মাত্রায় পৌঁছে গেছে। ক্ষমতাকে যক্ষের ধনের মতো আঁকড়ে ধরে রাখার জন্য কুটিল রাজনীতি, ষড়যন্ত্র আর তঞ্চকতাই হচ্ছে আওয়ামী রাজনীতির পরিচিতি।’
সরকারপ্রধানসহ আওয়ামী নেতাদের প্রতিদিনের ভাষা, সংলাপ, জবাব সন্ত্রাসী আস্ফালন ছাড়া কিছু নয় মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘যাদের রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি পীড়ন আর রক্তপাত নির্ভর, তারা জনমতের ভয় করে না, জবাবদিহিতা তো দুরে থাক। এমন ধারা-নীতির কারণেই গত পরশু বিএনপির বিশাল জনসভার পর থেকে সরকার আরও বেশি ক্ষিপ্ত ও প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠেছে।’
জনসভা শেষে পাইকারী হারে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের পরও সরকার তৃপ্ত হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সে কারণেই বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের তালিকা ধরে হাতিরঝিল থানায় তাদের বিরুদ্ধে হাস্যকর মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। ’
‘বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের কাছে ‘আষাঢ়ে গল্পের’একটা ‘ফরমেট’সবসময় প্রস্তুত করা থাকে। সময় মতো বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে সেগুলো ব্যবহার করা হয়। এবারেও পুলিশ তাই করেছে’— বলেন রুহুল কবির জিরভী।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে সরকার ছক ধরে এগুচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সারাদেশ নি:শব্দ ও জনশূন্য করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে গতককাল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘গত পরশু বিএনপির জনসভার পরে দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের চিত্র-দৃশ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। টেনে হিঁচড়ে, চ্যাংদোলা করে, সার্টের কলার ধরে কীভাবে বিএনপি লোকজনদের পুলিশ ভ্যানে তোলা হচ্ছে— সেগুলিও মানুষের কাছে সুষ্পষ্টভাবে প্রতীয়মান। অথচ ডাহা মিথ্যা বলা শুরু হলো-বিএনপি নেতাকর্মীরা নাকি পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা দিয়েছে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা নাকি এতে ইন্ধন দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ভোটারবিহীন সরকারের পুলিশ বাহিনী গণবিরোধী নীতি জনগণের মধ্যে প্রয়োগ করতে নিষ্ঠা সহকারে হানাদার বাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। আর সেজন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নিষ্ঠুর পীড়নের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে। পতন নিশ্চিত জেনেও সরকার বারবার এ ধরনের বিপজ্জনক খেলায় মেতে উঠেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সহপ্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন-
ফখরুলসহ বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
সারাবাংলা/এজেড/টিআর