বাংলাদেশ-ভারত পাইপলাইন, নভেম্বরে জমি অধিগ্রহণ
২ অক্টোবর ২০১৮ ১৮:৩৩
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা : আগামী নভেম্বর মাসে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইনের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ। জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হবে ২০১৯ সালে।
সম্প্রতি জমি অধিগ্রহণ ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করতে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। বিপিসির ঊধ্র্বতন এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।
বিপিসি’র চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘পাইপলাইন নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে আমরা দরপত্র আহ্বান করেছি। এ পাইপলাইন নির্মিত হলে দেশের উত্তর অঞ্চলে শুষ্ক মৌসুমে ডিজেল সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে। এর ফলে পরিবহন খরচ ও বর্জ্য ক্ষতি অনেকখানি কমবে।
বিপিসি’র সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ-ভারত প্রতিবেশী দুইদেশের মধ্যে এই প্রথম আন্তঃদেশীয় জ্বালানি তেল পাইন লাইন নিমার্ণ করা হচ্ছে। এ কাজ সহজ গতিশীল করতে এবং পাইপ লাইনের জমি অধিগ্রহণে তৃতীয় একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ জন্য গত মাসের শেষে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে আগ্রহপত্র জমা দিতে হবে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর বাংটলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নিজ নিজ দেশ থেকে পাইপলাইন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
জানা গেছে, মোট ১৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ মৈত্রী পাইপলাইন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুর তেল ডিপো পর্যন্ত হবে। পাইপলাইন পঞ্চগড়, নীলফামারী ও দিনাজপুরের মধ্য দিয়ে পার্বতীপুর তেল ডিপো পর্যন্ত যাবে। ২০২০ সালের মধ্যে পাইপলাইনের কাজ শেষ হবে। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশে বছরে ১০ লাখ টন ডিজেল সরবরাহ করবে। বর্তমানে বাংলাদেশে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় ডিজেল চাহিদা ১১ কোটি টন।
ভারতের আসামে নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) থেকে তেল সরবরাহ করা হবে। তেল পাইপলাইনে মোট খরচ হবে ৪২৯ কোটি টাকা। পাইপলাইনের ছয় কিলোমিটারের ভারতীয় অংশ এনআরএলের মাধ্যমে অর্থায়ন করা হবে। অন্যদিকে, অবশিষ্ট ১৩০কিলোমিটার তেল পাইপলাইন বাংলাদেশে থাকবে এবং এটাও ভারতের চলমান উন্নয়ন সহযোগিতা কর্মসূচির মাধ্যমে অর্থায়ন করা হবে।
এর আগে ২০১৫ সালের অক্টোবরে বিপিসি ও এনআরএল ১৫ বছরের চুক্তি করে। পাইপলাইনের বার্ষিক পরিবহন ক্ষমতা ১০ লাখ টন হবে। তবে ১৫ বছরের চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম তিন বছরে আড়াই লাখ টন, আগামী তিন বছরের জন্য তিন লাখ টন, সপ্তম থেকে দশম বছরে সাড়ে তিন লাখ টন, এবং ১১তম বছর থেকে চার লাখ টন ডিজেল আমদানি করা হবে।
বর্তমানে অপরিশোধিত ও শোধিত তেল সামুদ্রিক জাহাজ, নৌবাহিনী, ওয়াগন ট্রেন এবং ট্যাংক লরির মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্থানান্তর করতে হয়।
সারাবাংলা/এই্চএ/একে