Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাজনৈতিক রেষারেষিতে আমাদের টানবেন না: হাইকোর্ট


৩ অক্টোবর ২০১৮ ২১:৫৩

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: রাজনৈতিক রেষারেষিতে আদালতকে না টানতে উভয়পক্ষের আইনজীবীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিকালে বুধবার (৩ অক্টোবর) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ কথা বলেন।

মামলার শুনানির এক পর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলীর মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এ সময় আদালত তাদের শান্ত করতে বলেন, আপনারা আল্লাহর ওয়াস্তে রাজনৈতিক রেষারেষিতে আমাদের টানবেন না। এসব কারণে রাজনৈতিক ইস্যুর মামলা শুনানির জন্য গ্রহণ করতে চাই না। আমাদের সমস্যা হচ্ছে, এক পক্ষে রায় গেলে অন্য পক্ষ অখুশী হয়। এটা নিয়ে টক-শো’তে আলোচনা-সমালোচনা হয়। আর তাতে আমরা ভিকটিমাইজড হই। বিচারকরা টার্গেট হয়। আমাদের প্রমোশন আটকে যায়। আপিল বিভাগে যেতে সমস্যা হয়।

এ সময় ডায়াচে দাঁড়ানো খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকটে জয়নুল আবেদীনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাদের ১০ জন বিচারককে আপনারা কলমের এক খোঁচায় না করে দিলেন। এতে পারিবারিকভাবে ওই বিচারকের পরিবার কতটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল, তাদের ছেলেমেয়ের কথা একটিবারের জন্যও ভাবলেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার না আসলে তো তারা মামলাও করতে পারতো না। তাদের মামলা করতে দিতেন না।

আদালত আরও বলেন, আগে বিচারকরা রায় দিতে দুই দিকে (বাদী-বিবাদী) চিন্তা করতেন। আর এখন বাস্তবতা হলো, রায় দিতে তিন দিকে (বাদী-বিবাদী-নিজদের) চিন্তা করতে হয়।

শুনানিকালে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, একজন কয়েদীর ইচ্ছা অনুযায়ী তো তার পছন্দসই হাসপাতালে চিকিৎসা হবে না। বরং চিকিৎসা হবে জেল কোড অনুযায়ী। আর সে হিসেবে বঙ্গবন্ধু হাসপাতালই উপযুক্ত জায়গা। যেখানে সব ধরনের ব্যবস্থা আছে। ওনি (খালেদা জিয়া) সেখানে যেতে চান না। ওনি যাবেন এমন জায়গায়। যেখানে গেলে তার সঙ্গে তার সাঙ্গ পাঙ্গরা যোগাযোগ করতে পারবে। এ সময় বিএনপির আইনজীবীরা অ্যাটর্নি জেনারেলের ‘সাঙ্গপাঙ্গ’ শব্দটির বিষয়ে আপত্তি তোলেন।

বিজ্ঞাপন

এ সময় আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলকে প্রশ্ন করেন তাহলে কি তার চিকিৎসা হবে না। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, অবশ্যই হবে। অন্য আসামিদের যেমন হয় তারও তেমনি হবে। তা ছাড়া তিনি তো চিকিৎসা নিতে অস্বীকার করেছেন।

এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ওনি (অ্যাটর্নি জেনারেল) মিস লিডিং করছেন। আপনি এটা করতে পারেন না। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি চিৎকার করবেন না। আপনি চুপ করুন। এতো ভক্ত হয়েন না।

আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী অ্যাটর্নি কে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি অ্যাটর্নি জেনারেল হয়ে এমপি নির্বাচন করার জন্য এসব কথা বলছেন।

তখন আদালত বলেন, ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আপনারা এভাবে বলতে পারেন না। পরে উভয়পক্ষ চুপ করে যান।

শুনানি শেষে আগামীকাল এ বিষয়ে আদেশের জন্য দিন ঠিক করে আদালত তার কার্যক্রম মুলতবি করেন।

বিশেষায়িত হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রদানের নির্দেশনা চেয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর রিটটি দায়ের করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর বেশ কয়েকবার সময় পেছানোয় আজ ওই আবেদনের শুনানি শেষ হয়।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পাঁচ আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং প্রত্যেকের দুই কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করে রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায় ঘোষণার পর পরই খালেদা জিয়াকে পুরানো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।

সারাবাংলা/এজেডকে/এমআই

হাইকোর্ট

বিজ্ঞাপন

খুলনায় যুবকের পেটে মিলল ইয়াবা
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০২

আরো

সম্পর্কিত খবর