‘আদেশের কপি পেলেই ব্যবস্থা নেবে হাসপাতাল ও কারা কর্তৃপক্ষ’
৪ অক্টোবর ২০১৮ ১৮:৩১
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তির নির্দেশনা দিয়ে হাইকোর্টের আদেশের কপি পাওয়ামাত্রই কারাগার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
তিনি বলেন, ‘কোর্ট শর্ট অর্ডার দেবেন বলে জানিয়েছেন। এখন পিটিশনারদের নিজ খরচে ওই আদেশের কপি স্পেশ্যাল মেসেঞ্জারের মাধ্যমে জেল কর্তৃপক্ষ ও বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে পৌঁছানো হবে। যখনই তারা সেই কপি পাবেন, আমি আশা করব তখনই তারা পদক্ষেপ নেবেন।’
আরও পড়ুন- পছন্দের চিকিৎসকের অধীনে খালেদাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তির নির্দেশ
বৃহস্পতিবার (৪ অক্টোবর) খালেদা জিয়ার পছন্দ অনুযায়ী তিন জন চিকিৎসককে অন্তর্ভুক্ত করে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড পুনর্গঠন ও অবিলম্বে বিএসএমএমইউয়ে ভর্তি করে চিকিৎসার নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, খালেদা জিয়ার পছন্দমতো হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য তার পক্ষে একটি রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। এ মামলায় গত দুই দিন শুনানি হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) এ মামলায় আদেশ দেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তিন সদস্য স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সঙ্গে যুক্ত জানিয়ে তার আইনজীবীরা ওই তিন জনকে নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন।
মাহবুবে আলম বলেন, আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আদেন দিয়েছেন, কারাকর্তৃপক্ষ বা সরকার বা মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে হাসপাতালে অনতিবিলম্বে ভর্তির ব্যবস্থা নেবে। দ্বিতীয় হলো, সরকার যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছিল, ওই মেডিকেল বোর্ডের দু’জন চিকিৎসককে (ডা. আব্দুল জলিল চৌধুরী ও ডা. বদরুন্নেছা আহমেদ) রেখে নতুন করে মেডিকেল বোর্ড গঠন করতে হবে। মেডিকেল বোর্ডে যুক্ত নতুন তিন চিকিৎসক স্বাচিপ বা ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সদস্য বা কর্মকর্তা হবেন না।
হাইকোর্টের তৃতীয় নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ফিজিওথেরাপিস্ট, গাইনোকোলজিস্ট বা মেডিকেল টেকনিশিয়ান খালেদা জিয়ার পছন্দমতো বোর্ডের সুপারভিশনে কাজ করতে পারবেন। আর খালেদা জিয়া যদি মনে করেন, অন্য কোনো চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করাবেন সেটাও মেডিকেল বোর্ডের অনুমতিসাপেক্ষে তিনি করাতে পারবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমরা আদেশের বিরোধিতা করেনি। আমরা চেয়েছি, এরকম একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তার ইচ্ছামতো যেকোনো হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারেন না। তাকে চিকিৎসা সরকারই দেবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে রেখেই তাকে দিতে হবে এবং তার নিরাপত্তার স্বার্থেই সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন কিনা— জানতে চাইলে মাহবুবে বলেন, আমার মনে হয় না। তবে রায়টা দেখে যদি মনি করি উচ্চ আদালতে যাওয়ার কারণ আছে, তাহলে যাব। আদালত থেকে যা শুনেছি, তাতে আমার মনে হয় না যাওয়ার প্রয়োজন আছে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় বিদেশি চিকিৎসক কাজ করতে পারবেন কিনা— জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সেটা অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যাবে। এটা নির্ভর করবে বোর্ডের অনুমোদনের ওপর।
এর আগে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে বিশেষায়িত কোনো হাসাপাতালের চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের রিট দায়ের করেন তার আইনজীবীরা। ওই রিটের শুনানি শেষে আদালত আজ এ আদেশ দেন।
সারাবাংলা/এজেডকে/টিআর