মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার কারণে ৯ ঘণ্টা শাহবাগে অবরোধ স্থগিত
৪ অক্টোবর ২০১৮ ২২:২৬
।। ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাবি: আগামীকাল শুক্রবার মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার কারণে ভোর ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেছে কোটা বহালের দাবিতে অবস্থানকারীরা। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মুখপাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিন এ ঘোষণা দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৪ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে শাহবাগে অবস্থানস্থলে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
তিনি বলেন, ‘যতদিন প্রধানমন্ত্রী আছেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধারা আছি ততদিন মুক্তিযুদ্ধের সন্তানদের দাবি আদায়ের জন্য রাস্তায় দাঁড়াতে হবে না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই দেশেকে ভালোবাসেন এবং দেশের মঙ্গল কামনা করেন। তাই আপনাদেরকে অনুরোধ করছি কালকের পরীক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করছি, আমরা বেঁচে থাকতে আমাদের সন্তানদের রাস্তায় দাঁড়াতে হবে না, বীর মুক্তিযুদ্ধের সন্তনরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।’
এ সময় ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়াসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের পর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মুখপাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিন মেডিকেল পরীক্ষার জন্য আগামীকালকের জন্য সকাল ৬টা থেকে ৩টা পর্যন্ত আন্দোলন বন্ধ স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন।
এই সময়টাতে তারা গাড়ি যাতে ভালো ভাবে চলতে পারে সেটা করবেন। তবে আজ বৃহস্পতিবার রাত তারা শাহবাগে থাকবেন এবং আগামীকাল তিনটা থেকে আবার আন্দোলন শুরু করবেন
সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ কোটা বহালের দাবিতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ গঠন করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিনকে এই মঞ্চের মুখপাত্র করা হয়েছে।
মঞ্চ গঠনের পর মুখপাত্র হিসেবে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক।
তিনি বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য শাহবাগে অবস্থান চলবে। আজ বৃহস্পতিবার (৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, সরকারকে জানাতে চাই, সচিব কমিটিকে জানাতে চাই; যে প্রজ্ঞাপন আপনারা জারি করেছেন তা কোনো স্বেচ্ছাচারী বিষয় নয় ৷
আগামী শনিবারের মহাসমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। এ সময় তিনি আন্দোলনরতদের ছয় দফা পড়ে শোনান। সেগুলো হলো:
১) সামাজিক মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কটূক্তিকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে ৷
২) মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কোটা পর্যালোচনা কমিটির প্রতিবেদন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে ৷
৩) ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিসিএসসহ সব চাকরির পরীক্ষায় প্রিলিমিনারি থেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাস্তবায়ন করতে হবে।
৪) মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও তাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে।
৫)স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার ও বংশধরদের চিহ্নিত করে সরকারি সব চাকরি থেকে বহিষ্কার, নাগরিকত্ব বাতিল ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের অনুকূলে ফেরত নিতে হবে।
৬) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
কোটা পর্যালোচনায় গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরিতে সব ধরনের কোটা বাতিল করেছে সরকার।
শুক্রবার এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
কোটা বাতিলের প্রতিবাদে বুধবার রাত থেকে শাহবাগে অবস্থান নেন মুক্তিযোদ্ধারের সন্তান ও তাদের প্রজন্মরা।
সারাবাংলা/কেকে/একে