Wednesday 15 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১৬ কর্মী দিয়ে ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন রাখতে হিমশিম কুবি প্রশাসন


৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৮:৪৯ | আপডেট: ৫ অক্টোবর ২০১৮ ১৫:৫১

।। মো. জাহিদুল ইসলাম, কুবি করেসপন্ডেন্ট ।।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) নানামুখী সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব সমস্যার মধ্যে পরিবেশ দূষণ ও ক্যাম্পাসের অপরিচ্ছন্নতা শিক্ষার্থীদের ভোগাচ্ছে সবচেয়ে বেশি। পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী রয়েছেন মাত্র ১৬ জন, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিভিন্ন ভবনের নির্মাণকাজ চলায় ক্যাম্পাসে বেড়েছে বায়ুদূষণ। তাই অনেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে মাস্ক পড়ে চলাচল করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি ভবনের আশপাশ ধুলাবালির স্তূপে পরিণত হয়েছে। ক্যাম্পাসের রাস্তাগুলো ভেঙে বিভিন্ন জায়গাতে ছোটবড় গর্ত হয়ে বালু জমে আছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্কিং লটের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। মাটি, বালু আর ইটের সুরকি দিয়ে ভরে আছে পুরো জায়গাটি। বাস ছাড়ার সময় ও থামার সময় মাঠসহ আশপাশ ধুলোয় অন্ধকার হয়ে যায়।

ক্যাম্পাসের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, ক্যাম্পাসের ভেতরে শিক্ষার্থীদের চলাচলের রাস্তাগুলো প্রায়ই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। একটু বৃষ্টি হলে কাদা আর রোদের মধ্যে ধুলাবালির ওড়াউড়ি নৈমিত্তিক ঘটনা। এ কারণে আমাদের মাস্ক পড়ে চলাচল করতে হয়। তবে তাতেও খুব বেশি লাভ হয় না।

একজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করে বলেন, বিভিন্ন অনুষদ ভবনের আশপাশের কথা নাই বা বললাম। মনে হয়, ভবনের চারপাশই ডাস্টবিন। যদি প্রশাসন ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করে এবং রাস্তাগুলো পাকা করে দেয়, তাহলে কিছুটা হলেও সমস্যার সমাধান হবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, ধুলাবালিতে বাড়ছে শিক্ষার্থীদের অসুস্থতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে সেবা নেওয়া বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদেরই সাধারণ শারীরিক সমস্যা হলো শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ও সর্দিকাশি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদুল হাসান খান সারাবাংলাকে বলেন, প্রতিনিয়তই বাড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শ্বাসকষ্ট ও বায়ুদূষণজনিত সমস্যাগুলো। ক্যাম্পাসের ধুলাবালির কারণে ইদানীং এই সমস্যাগুলোর রোগী বেশি আসছে মেডিকেলে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখার প্রধান মো. মিজানুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সংখ্যা খুবই কম, মাত্র ১৬ জন। এই অল্প জনবল দিয়ে কাজ চালাতে নিয়মিতই হিমশিম খেতে হচ্ছে। কারণ এত অল্প জনবল দিয়ে পুরো ক্যাম্পাসের সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করা সত্যিই অসম্ভব। তাছাড়া পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের দায়িত্বহীনতার প্রভাব তো রয়েছেই। আমরা প্রশাসনকে বারবার বিষয়টি অবগত করার পরও এখনও কোনো সমাধান আসছে না।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় ভেতরের রাস্তাগুলো নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়তই ক্ষোভ জানিয়ে আসছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমরা যে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তা ক্যাম্পাসের মধ্যে ঢুকলে বোঝা যায় না। পুরো ক্যাম্পাসজুড়েই ধুলাবালি আর কাদার ছড়াছড়ি। ক্যাম্পাসে এক ইঞ্চি পরিমাণ পিচঢালা রাস্তা নেই। আমরা চাই একটি স্বাস্থ্যসম্মত পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী সারাবাংলাকে বিষয়ে বলেন, আমাদের এস্টেট শাখায় লোকবলের সংকট রয়েছে। যারা আছে, তারাও কাজে নিয়মিত না। তাই আমরা আউটসোর্সিংয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নিয়োগ দিয়ে ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন করতে পদক্ষেপ নিয়েছি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনএইচ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর