মাদ্রাসায় মিমকে ‘ধর্ষণের পর হত্যা’, বিচার চেয়ে স্বজনদের মিছিল
৫ অক্টোবর ২০১৮ ১৫:১০ | আপডেট: ৫ অক্টোবর ২০১৮ ১৬:১৮
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: রাজধানীর রামপুরায় সানজিদা রশিদ নামে এক মাদ্রাসাছাত্রীকে হত্যার বিচার চেয়ে শুক্রবার প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী ও মিমের স্বজনরা।
মিমের স্বজনদের অভিযোগ রামপুরায় উলন জাতীয় মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীকে মিমকে মাদ্রাসার ভেতরে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এরপর লাশ বাথরুমে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের ইন্ধন রয়েছে বলে স্বজনদের অভিযোগ।
শুক্রবার (৫ অক্টোবর) রামপুরা বাজারে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা জানান, মিম হত্যার বিচার চেয়ে তারা এখানে এসেছেন। যেখানে ধর্মের চর্চা হয় সেখানে কোনোভাবেই এই হত্যাকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না।
মিম হত্যার বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলে জানান প্রতিবাদ মিছিলকারীরা।
পরে পুলিশ এসে প্রতিবাদকারীদের রামপুরা বাজার এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়। এরপর পুলিশের অনুরোধে মিমের স্বজন ও স্থানীয়রা স্লোগান দিতে দিতে ডিআইটি রোডের দিকে যান।
মিমের মা সীমা এ প্রতিবেদকের কাছে বলেন, ‘মিম এ মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্রী। গত শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিমের জন্য খাবার নিয়ে যান তিনি। মাদ্রাসায় গিয়ে দেখেন সব কক্ষে তালা মারা এবং ভেতরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
কী হয়েছে জানতে চাইলে মাদ্রাসার হুজুর আর বুয়ারা মিলে তাকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা মাদ্রাসার একটি ঘরে আটকে রাখে বলে অভিযোগ করেন সীমা। এসময় তার ব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তার সঙ্গে এমন রহস্যজনক আচরণ করায় তার মনে হতে থাকে তার মেয়েকে বোধহয় মেরে ফেলা হয়েছে। মাদ্রাসার এক আয়া রওশন আরাকে তিনি অনুরোধ করেন মেয়ের একটা খবর এনে দিতে। কিন্তু তার অনুরোধ রাখা হয়নি বলে জানান তিনি।
এ সময় মাদ্রাসার ভেতরে পুলিশ দেখতে পেয়ে তিনি আরও বেশি ভয় পেয়ে যান। পরে পুলিশ লাশ নামিয়ে নিয়ে চলে যায়। এবং মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ থেকে তাদেরকে বলা হয় যে মিম আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ সীমা কিংবা এলাকাবাসীদেরকে তখন লাশ দেখতে দেয়নি। মিমের লাশ মাদ্রাসার অজুকক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল।
প্রতিবাদ মিছিলে উপস্থিত মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগ করে যে লাশের পা মাটিতে মিশে ছিল তাই তারা মনে করছে এটা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা নয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে মিমের লাশ নামিয়েছে এমন একজন উপস্থিত ছিলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘লাশ নামানোর সময় তিনি মিমের হাতে পায়ে দড়ির দাগ দেখতে পান। এমনকি কোমরে মারধরের দাগ ছিল। এক পায়ের গোড়ালিতে আরেকটা ক্ষত ছিল।’
মিমের মা সীমা একটা গার্মেন্টসে কাজ করেন আর মিমের বাবা একজন ভ্রাম্যমাণ ফল বিক্রেতা। তাদের তিন সন্তানের মাঝে মিম বড়।
সারাবাংলা/আরএফ/একে