আ’লীগ-বিএনপিকে ছাড়িয়ে গেল ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশ
৫ অক্টোবর ২০১৮ ১৬:৩৩
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি‘র সম্প্রতি হয়ে যাওয়া সমাবেশ ও জনসভাকে ছাড়িয়ে গেছে চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ।
শুক্রবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে (বাদ জুমা) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুরু হওয়া মহাসমাবেশে এরই মধ্যে হাজির হয়েছেন লক্ষাধিক নেতা-কর্মী ও সমর্থক। দুর্নীতি দুঃশাসন, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন একটি। তবে সংসদে তাদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। কোনো দিন ছিলও না। বরং জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে সবগুলো আসনে জামানত হারিয়েছে দলটি।
সেই দলের জাতীয় মহাসমাবেশে লোকজনের উপস্থিতি দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সভা সমাবেশের চেয়ে অনেক বেশি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দক্ষিণ-পূর্বকোণে নির্মিত মঞ্চ থেকে শুরু করে পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্তস্থান প্রায় কানায় কানায় পূর্ণ।
শুধু উদ্যান নয়, শাহবাগ মোড় থেকে মৎস ভবন মোড় পর্যন্ত সড়ক ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের দখলে। জুমার নামাজের পরপরই এই সড়কের একপাশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সড়কের মাঝখানে জায়নামাজ এবং পাটি বিছিয়ে বসে পড়েছেন ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। এছাড়া শাহবাগ থেকে দলের নেতা-কর্মীদের মিছিল গিয়ে ঠেকেছে বাংলামোটর পর্যন্ত। যানজট সৃষ্টি হওয়ায় বাংলামোটর মোড়ে পিকআপ ছেড়ে পায়ে হেঁটে অংশ নিচ্ছেন তারা। তাদের হাতে দলের প্রতীক হাতপাখা। অন্যদিকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি পর্যন্ত চিত্র ছিল একই রকম। সাভার-গাবতলী থেকে আসা যাত্রীবাহী বাসগুলো মগবাজারের দিকে ঘুরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ।
আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেন্দ্রের নির্দেশে সারাদেশ থেকে নেতা-কর্মীরা মহাসমাবেশে অংশ নিতে ঢাকা এসেছেন। পীরের মুরিদ এবং কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের জন্য সমাবেশে আসা ছিল বাধ্যতামূলক।
বরিশালের মেহেদিগঞ্জ থেকে সমাবেশে আসা তসলিম জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লঞ্চে ওঠেন তিনি। শুক্রবার সকালে সদর ঘাটে নেমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পৌঁছান। সমাবেশে আসার জন্য তাদেরকে কোনো টাকা পয়সা বা খাবার দেওয়া হয়নি। পীরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থেকে সমাবেশে এসেছেন তিনি।
এদিকে সমাবেশের শুরুতে কিছু সময়ের জন্য বৃষ্টি নামলে লক্ষাধিক নেতা-কর্মী বৃষ্টি মাথায় নিয়েই দাঁড়িয়ে থাকেন। এর মধ্যে কোটা পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনরত মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের নেতা-কর্মীরা এখন তাদের অবস্থান ধরে রেখেছেন।
সারা বাংলা/এজেড/এটি