মেডিকেল বোর্ডের তিনজনই স্বাচিপের আজীবন সদস্য: ডা. জাহিদ
৬ অক্টোবর ২০১৮ ১৯:৩৩
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: উচ্চ আদালত তার নির্দেশনায় বলেছিলেন, বেগম খালেদা জিয়া তার পছন্দের চিকিৎসকের চিকিৎসা নিতে পারবেন। একইসঙ্গে তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডে আওয়ামীপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাচিপ (স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ) এবং বিএনপিপন্থী চিকিসকদের সংগঠন ড্যাব (ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) এর কেউ থাকতে পারবে না।
কিন্তু তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তিনজনই স্বাচিপের আজীবন সদস্য। তাহলে এখানে আদালতের নির্দেশনা কোথায় মানা হলো— অভিযোগ বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাব-এর মহাসচিব ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি, অর্থোপেডিকস বিভাগের অধ্যাপক ডা. নকুল কুমার দত্ত এবং ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহাবিলিটিশন বিভাগের ডা. বদরুন্নেছা আহমেদ-তারা তিনজনই স্বাচিপের আজীবন সদস্য বলে অভিযোগ তার।
ডা. জাহিদ বলেন, ‘পেশেন্ট রাইট’ বলে একটা কথা আছে। আবার সব হাসপাতালে আমরা সবাই যাই না, যে হাসপাতালে যার পছন্দ আছে, আস্থা রয়েছে সেই হাসপাতালে সেই রোগী সেই চিকিৎসকের কাছে সেবা নিতে যায়। কেবল বেগম খালেদা জিয়ার বিষয়ে নয়, তিনি সবার আগে একজন মানুষ, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। যে কোনও রোগীর বিষয়েই এ কথা প্রযোজ্য।
‘খালেদা জিয়া একজন বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক। তার অনেক অসুখ রয়েছে সেগুলো সর্ম্পকে আমরা জানি। তার হাঁটু প্রতিস্থাপন হয়েছে, চোখে কয়েকবার অস্ত্রোপচার হয়েছে। তার চিকিৎসায় তার পছন্দের চিকিৎসকদের নিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চলে।
আমাদের বক্তব্য ছিল তার পছন্দ অনুযায়ী একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা প্রয়োজন। মাননীয় আদালত মনে করেছেন, তার চিকিৎসা এখানে হবে-এবং সেখানে কিছু শর্তও দিয়েছেন তারা’ বলেন ডা. জাহিদ।
‘শুধু যে রাজনৈতিক শর্ত দিয়েছেন তা নয়, তার সেবার বিষয়েও বলেছেন তারা। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার চিকিৎসার বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। তার মেডিকেল বোর্ড গঠনের সময় তার যদি পছন্দের চিকিৎসক থাকে তাহলে বোর্ডের সদস্য হতে পারবে। কিন্তু তাকে এখানে আনার আগেই তার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।’
কোর্ট অত্যন্ত সুবিবেচনা নিয়ে আদেশ দিয়েছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তার মেডিকেল বোর্ডে এমন সব চিকিৎসকরা আছেন, যাদের নিয়ে বির্তক রয়েছে। ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি-তিনি বিএনপির মহাসচিবকে ভুল সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন। পরে আদালত তাকে বাদ দিয়ে আরেক মেডিকেল বোর্ড গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।’
আদালত বলেছিলেন, মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা কেউ স্বাচিপ বা ড্যাবের সদস্য হতে পারবেন না। কিন্তু এই মেডিকেল বোর্ডের তিনজন স্বাচিপের আজীবন সদস্য। তাহলে কী করে কোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়িত হলো বলে প্রশ্ন রাখেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘তার চিকিৎসা জন্য হাসপাতালে ভর্তি করেছেন- এটা ঠিক আছে।’
কিন্তু তিনি আসার আগেই মেডিকেল বোর্ড গঠন কী করে হলো, তাকে জিজ্ঞেস করা বা তার পছন্দ অপছন্দ জাজ করার সুযোগ কই রইল, বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে তার চিকিৎসা প্রয়োজন, একজন রোগীর চিকিৎসা প্রয়োজন।’
তাহলে কী মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখতে পারছেন না প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কোর্টের নির্দেশনা এখানে বাস্তবায়িত হয় নি, আমরা এটাই বলতে চাইছি।’
সারাবাংলা/জেএ/একে