খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল প্রশ্নে আদেশ ১৪ অক্টোবর
৭ অক্টোবর ২০১৮ ১৩:২৬
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়াপারসন খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল সংক্রান্ত আদেশ আগামী ১৪ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
রোববার (০৭ অক্টোবর) শুনানি শেষে পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামানের আদালতে এ আদেশ দেন। এ ছাড়াও মামলাটির রায়ের তারিখ ঘোষণার জন্য রাষ্ট্রপক্ষ যে আবেদন করেছে সে বিষয়ে আদেশের জন্যও ওই দিন ঠিক করেছেন আদালত।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়েছিলেন আদালত। আজ (০৭ অক্টোবর) এ বিষয়ে জবাব দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। সে অনুযায়ী খালেদার আইনজীবীরা জবাব দাখিল করেন। তবে আইনজীবীরা খালেদা জিয়ার পক্ষে ডিপেন্ড করছেন কিন্তু রিপ্রেজেন্ট করছেন না। তাই এ বিষয়ে কোনো শুনানি হয়নি।
এদিন মামলার কার্যক্রম সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে শুরু হয়ে ১২ টা ২২ মিনিটে শেষ হয়। মামলার শুরুতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া আদালত দুইটা আবেদন করেন করেন। খালেদা জিয়ার জামিন বৃদ্ধিকরণ ও এ মামলার মুলতবি ঘোষণার জন্য আবেদন করেন।
খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘খালেদা জিয়া অসুস্থ, তাকে হাসপাতলে ভর্তি করানো হয়েছে। তিনি আপনার কাস্টডিতেই আছেন। জেলে থাকা আসামির জামিন বাতিল করার কোনো সুযোগ নেই।’
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জামিন কেন বাতিল করা হবে না তার জবাব দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। খালেদার আইনজীবীরা কোনো যুক্তিসঙ্গত জবাব দাখিল করতে পারেননি। তাই তার জামিন বাতিল করা হোক। আর এ মামলার কার্যক্রমের সমাপ্ত চেয়ে রায়ের দিন ধার্যের যে আবেদন ছিল তারও আদেশ দেওয়া হোক।’
তিনি বলেন, ‘খালেদার জামিন বাতিল কেন হবে না সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তার আইনজীবী কিন্তু কেন রাখা হবে সেই বিষয়ে কোনো কিছু ম্যানশন করেননি। উনারা (খালেদার আইনজীবী) বক্তব্য দিয়েছেন। জামিন বৃদ্ধি করেন। মামলা পরিচালনা করেন না। এ পর্যন্ত ৪৫টি ধার্য তারিখ পিছিয়েছেন। ১ বছর ৯ মাসের বেশি সময় নিয়েছেন।’
এরপরে অপর আসামি মনিরুল ইসলাম মুন্না ও জিয়াউল ইসলামের পক্ষের আইনজীবীরা বলেন, ‘গত ৩০ তারিখ আমরা উচ্চ আদালতে আবেদন করেছি যা শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। তাই যুক্তিতর্ক শুনানি মুলতবি চেয়েছি।’
মাসুদ আহমেদ জানান, খালেদা জিয়া জামিন ভঙ্গের কোনো কাজ করেননি। জামিন থাকাকালীন জামিনের কোনো প্রকার শর্ত ভঙ্গ করেননি। এর আগে খালেদা জিয়ার জামিন স্থায়ী করার জন্য বারবার আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন। এরপর থেকে একটু একটু করে জামিন বৃদ্ধি করেন। আদালতের ন্যায় বিচার স্বার্থে ও খালেদা জিয়ার অসুস্থারা কথা বিবেচনা করে জামিন বৃদ্ধির আবেদন জানান।
এর পরিপ্রেক্ষিতে কাজল বলেন, ‘খালেদা জিয়া যখন দেশের বাইরে ছিলেন তখন জামিনের শর্তভঙ্গ করেছেন। জামিনের অপব্যবহার করেছেন।’
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আদেশ প্রদান করেন।
চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা ছাড়া অভিযুক্ত অন্য তিন আসামি হলেন খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ-এর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২জন সাক্ষী। ২০১১ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।
মামলাটিতে খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করেন।
সারাবাংলা/এআই/একে