আইসিটি আইনের মামলায় আমীর খসরুর জামিন বাড়ল
৭ অক্টোবর ২০১৮ ১৫:১৩
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে উসকানির অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর জামিনের মেয়াদ ১৪ দিন বাড়িয়েছেন আদালত।
২১ অক্টোবর পূর্ণাঙ্গ জামিন শুনানির আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধা। আন্দোলনের সময় ফাঁস হওয়া আমীর খসরুর কথোপকথনের অডিও রেকর্ড শুনানির সময় উপস্থাপনের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (৭ অক্টোবর) আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী সারাবাংলাকে বলেন, হাইকোর্টের ছয় সপ্তাহের মেয়াদ শেষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন। শুনানিতে উনার আইনজীবীরা দাবি করেছেন, কথোপকথনের রেকর্ডটি আমীর খসরু সাহেবের নয়। তখন আদালত জামিনের মেয়াদ ২১ তারিখ পর্যন্ত বাড়িয়ে পূর্ণাঙ্গ জামিন শুনানিতে কথোপকথনের রেকর্ডটি উপস্থাপনের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এছাড়া নিম্ন আদালত থেকে মামলার নথিও পূর্ণাঙ্গ জামিন শুনানিতে উপস্থাপনের জন্য আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
‘হাইকোর্টের জামিন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ। কিন্তু আপিল বিভাগ জামিন বহাল রেখেছে। সেই আদেশের মূল কপি আদালতে জমা না দিয়ে আমীর খসরু সাহেবের আইনজীবীরা সার্টিফায়েড কপি জমা দেন। সেটা আদালত গ্রহণ করেননি। পূর্ণাঙ্গ জামিন শুনানিতে মূল কপি জমা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।’ বলেন নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী
আমীর খসরুর আইনজীবী মফিজুল হক ভূঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, মামলা দায়েরের পর গত ২৭ আগস্ট বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করে ছয় সপ্তাহের জামিন পান। হাইকোর্ট শর্ত দিয়েছিল মেয়াদের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। এর ভিত্তিতে আমরা আজ (রোববার) জামিনের আবেদন করেছিলাম। আদালত ২১ অক্টোবর পর্যন্ত জামিন দিয়েছেন।
এর আগে গত ৪ আগস্ট বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় মামলাটি দায়ের করেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর।
মামলায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাত ও ষড়যন্ত্রের চেষ্টার অভিযোগ তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ (২) ধারা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫/৩ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
গত ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের অদূরে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব নিহত হয়। এ ঘটনার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের মধ্যে আমীর খসরুর মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে কুমিল্লায় অবস্থানরত নওমী নামে এক ছাত্রদলের কর্মীর কথোপকথনের অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়। এতে আমীর খসরুর কণ্ঠে বলতে শোনা যায়, তিনি ওই কর্মীকে বলছেন ঢাকায় এসে লোকজন নিয়ে নেমে পড়তে। ওইদিনই ঢাকার ধারমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা হয়।
মামলায় জাকারিয়া দস্তগীর দাবি করেন, আমীর খসরুর উসকানির জেরে নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তার কথার জেরেই ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা হয়।
সারাবাংলা/আরডি/এমএইচ