মেলা জুড়ে বঙ্গবন্ধু আর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ
৩ জানুয়ারি ২০১৮ ২০:৩২
জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা:ঢাকার বাণিজ্য মেলাকে ঘিরে নগরবাসীর আগ্রহের কমতি নেই। শুধু রাজধানীর মানুষ না মাসজুড়ে চলা এই জমজমাট মেলায় ভীড় করেন সারাদেশের মানুষ। বাবা-মার হাত ধরে আসে ছোট ছোট শিশু আর কিশোর-কিশোরীরা। প্রতি বছরের মতো এবারও এই নতুন প্রজন্মের জন্য মেলা প্রাঙ্গনে আনা হয়েছে কিছুটা নতুনত্ব।
শিশু-কিশোররা যেন দেশের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারে সেজন্য বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নে এবার আছে বাড়তি আয়োজন।বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ জাতিসংঘে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় দূর্লভ ছবি আর শিল্পকর্মের নান্দনিক উপস্থাপনায় মুগ্ধ হচ্ছেন দর্শনার্থীরা।
বুধবার মেলা ঘুরে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নে উৎসুক দর্শনার্থীদের ভীড়। ভিন্ন আঙ্গিকে আর বড় পরিসরে সাজানো এই প্যাভিলিয়নে ছোটদের পাশাপাশি ভীড় করছেন নানা বয়সী মানুষ। সবাই আগ্রহ নিয়ে ঘুরে ঘুরে ঘুরে দেখছেন ,কেউ কেউ ছবিও তুলছেন বন্ধু বা পরিবারের সাথে।
প্যাভিলিয়নের এক পাশে তৈরি করা হয়েছে নদী। সেখানে একটি বড় নৌকার পাশে রাখা হয়েছে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা । এছাড়া চার পাশে রয়েছে ফুলের বাগান। দরজায় ঢুকতেই হাত উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর একটি ভাস্কর্য রাখা আছে। যেন সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছেন তিনি।
বাণিজ্য মেলার আয়োজক সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য সারাবাংলাকে বলেন, আমরা চাই ,বঙ্গবন্ধুকে আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে। তাই এই আয়োজন। এবার প্যাভিলিয়নের পরিসর বাড়ানোসহ এর নান্দনিকতাও বাড়ানো হয়েছে। এখানে এলে সবাই অনেক কিছু শিখতে ও জানতে পারবে।
এবারের প্যাভিলিয়নে ২৬টি চিত্রে বঙ্গবন্ধু শীর্ষক একটি প্রদর্শণীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রকাশিত ‘২৬ চিত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’ গ্রস্থ থেকে ছবিগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। বইটির সম্পাদনা করেছেন, হাসেম খান,মুনতসীর মামুন,সেলিনা হোসেন,সুব্রত বড়ুয়া ও শাহজাহান কিবরিয়া। বিশাল আকারের ছবি গুলোতে ফুটে উঠেছে বঙ্গবন্ধু ছেলে বেলা থেকে রাজনৈতিক, পারিবারিক, ব্যক্তিগত এবং বিভিন্ন সময়ের চিত্র। এছাড়া দেয়াল জুড়ে আছে বিভিন্ন ফটোগ্রাফ এবং পেইন্টিং। ছবিগুলো এঁকেছেন শিল্পী রাব্বানী শামিম,রফিকুন নবী,বীরেন সোম, সামিনা নাফিস,ফরিদা জামান,বিশ্বজিত গোস্বামী,কামালুদ্দিন,আতিয়া ইসলাম এ্যানি, সাফিন ওমর ,আলমগীর ও তুষারসহ আরও অনেকে।
প্যাভিলিয়নে দিন ও রাত মিলে ৭ বার তথ্যচিত্র প্রদর্শণ করা হচ্ছে। সকাল সাড়ে ১০টায় প্রদর্শণ করা হয় বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ,সাড়ে ১১টায় একাত্তরের গণহত্যা, দুপুর ২টায় আমাদের বঙ্গবন্ধু,বিকেল ৩ টায় জাগে প্রাণ পতাকায়, বিকেল সাড়ে ৪ টায় চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু, সন্ধ্যা ৬ টায় স্বাধীনতা কি করে আমাদের হলো এবং রাত ৮ টায় আমাদের বঙ্গবন্ধু শীর্ষক তথ্যচিত্র দেখানো হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নে ঘুরতে আসা ঢাকা কমার্স কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইয়ামিন আহমেদের সঙ্গে। ইয়ামিন জানায় তারা বন্ধুরা মিলে বাণিজ্য মেলা ঘুরতে এসেছে। বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নে এসে অনেক দূর্লভ ছবি এবং অনেক তথ্য জানতে পেরেছে। কুমিল্লার চান্দিনা থেকে এসেছেন ব্যবসায়ী নাসির মজুমদার। তিনি সারা বাংলাকে বলেন, মেলায় এসে যদি কেউ বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নে না আসে তাহলে বড় মিস করবে। বিশেষ কবে শিশুদের নিয়ে অবশ্যই এখানে আসা উচিত। আমার খুবই ভাল লাগছে।
সারাবাংলা/জেজে/জেডএফ