‘নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থায় ন্যায়বিচারের সম্ভাবনা নেই’
৭ অক্টোবর ২০১৮ ১৯:১০
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: বর্তমান বিচার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থা। এখান থেকে খালেদা-তারেক রহমানসহ ভিন্ন মতের কারোই ন্যায়বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এবং নিম্ন আদালতের আরেক বিচারপতির দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর বিচারকদের মধ্যেও এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে বলেও জানান বক্তারা।
রোববার (৭ অক্টোবর) সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের মিলনায়তনে আইনজীবী সমিতি আয়োজিত ‘গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা’ শীর্ষক এক সেমিনারে অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন।
সেমিনারে বক্তব্য দেন- প্রফেসর ড. এমাজ উদ্দিন আহমদ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, গণতান্ত্রিক আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, গণস্বাস্থের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদসহ অনেকে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘দেশে এখন কোনো ন্যায়বিচারের পরিবেশ নেই। বিচারকরাই যেখানে আতঙ্কিত সেখানে খালেদা তারেক বা বিরোধী দলের কারোই ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার নেই।’
আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘বিচারপতি এস কে সিনহাকে বিতাড়নের মাধ্যমে জাতি একটি সংকটে পড়েছে। যে দেশে প্রধান বিচারপতি বিচার পায় না, সে দেশে খালেদা-তারেক বা আমরা কেউ বিচার পাবো না।’
রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভের একটি প্রশাসন যেটা এখন পুলিশ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এবং রাষ্ট্রটি পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাকি দুইটি স্তম্ভ (বিচার ও আইন) অসহায় হয়ে পড়েছে।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকলে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে আজ জেলে যেতে হতো না। এবং তারেক রহমানের ওপর এই ধরণের নির্যাতন হতো না। আমাদের লড়াই করতে হবে বিচার বিভাগের পরিপূর্ণ স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান বিনির্মাণের জন্য।’
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি ৪ বিচারপতিকে ডেকে নিয়ে গেলেন, তাদের শিখিয়ে দিলেন। তারা এসে রাষ্ট্রপতির কথা মতো বললেন, তোমার সঙ্গে (সুরেন্দ্র কুমার সিনহা) আমরা বিচারে বসবো না। অভিযোগের মামলা দায়েরের আগেই বিচার হয়ে গেলো।’
গণতান্ত্রিক আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমানে দেশে নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থা চলছে। ১৬ কোটি মানুষ আজ অবরুদ্ধ। দেশের মানুষ আজ কারাগারে। একদিনের জন্য একটা ভোটের মহড়া হয়। এই সরকার ২০০৮ সালে নির্বাচিত হয়েছিলো এখন এই সরকার একটি অনির্বাচিত ও অবৈধ সরকার।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি এখন রিফিউজিতে পরিণত হয়েছেন। আরেক বিচারপতি যিনি তারেক রহমানকে খালাস দিয়েছিলেন তিনি মালয়য়েশিয়া পালিয়ে গিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।’
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকেনের সঞ্চালনায় সেমিনারের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
সারাবাংলা/এজেডকে/এমও