গোলাম দস্তগীর গাজীর প্রচেষ্টায় রূপগঞ্জে বদলে গেছে শিক্ষার চিত্র
৯ অক্টোবর ২০১৮ ১১:১১
।। শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
নারায়ণগঞ্জ: স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার শিক্ষাক্ষেত্রে লাগেনি তেমন উন্নয়নের ছোঁয়া। ২০০৮ সালেও অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবস্থা ছিল নাজুক।
ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল রূপগঞ্জ উপজেলা। এখন রূপগঞ্জে বদলে গেছে শিক্ষার চিত্র। এ ছাড়া রূপগঞ্জে শতভাগ শিক্ষার্থী এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানমুখী। ফলে এ উপজেলায় ঝরেপড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা এখন শূন্যের কোঠায়।
রূপগঞ্জে শিক্ষাক্ষেত্রে এত কিছুর পরিবর্তন হয়েছে যার হাত ধরে তিনি হলেন, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক)।
রূপগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, গোলাম দস্তগীর গাজীর একান্ত প্রচেষ্টায় রূপগঞ্জের ৪১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন করে ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। সেগুলো হচ্ছে— দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দড়িকান্দি পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জাঙ্গীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেন্দুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গুতলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বরুনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তারাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, টাওড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাছিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভূলতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোলাকান্দাইল দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাটাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাড়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভোলাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব দাউদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্বগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাণীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর খৈসাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বৈলদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডিপি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডহরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফুলকুড়ি কমিউনিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জনকল্যাণ আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কান্দাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুশরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নওগাঁ দীঘলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পলখান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধামছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেন্দুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রূপসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছনী বাড়িয়ারটেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ব্রাহ্মণগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চারিতালুক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোয়ালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কামশাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, করাটিয়া পূর্বেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাওড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিমগাঁও উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রূপসী কাজিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এছাড়া রূপগঞ্জে বেসরকারি ৩২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ হয়েছে সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীরের প্রচেষ্টায়। সেগুলো হচ্ছে—পিতলগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুশরী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আগারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফজলুল রহমান মেমোরিয়াল প্রাথমিক বিদ্যালয়, হরিনা ইসমাইল সাউদ প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাহনা প্রাথমিক বিদ্যালয়, জনকল্যাণ আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়,আউখাব প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোলাকান্দাইল মধ্য প্রাথমিক বিদ্যালয়,পূর্ব দাউদপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাবই প্রাথমিক বিদ্যালয়, রূপসী কাজীপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভোলাব আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়, হারিন্দা প্রাথমিক বিদ্যালয়, পলখান প্রাথমিক বিদ্যালয়, করাটিয়া আঙ্গাঁরজোড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডহরগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোয়াগাঁও দিঘলীয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, রোহিলা প্রাথমিক বিদ্যালয়, বৈলদা প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাওড়া সেলিমনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিমগাও দক্ষিণ প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাউলি পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছাতিয়ান প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধুখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কান্দাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুশাব অস্থায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়, গাবতলী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফুলকুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডাক্তারখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলমপুরা প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ডিপি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এ ছাড়া বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে ১৫শ বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের আওতায় রূপগঞ্জে হাজী মোস্তাফিজুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এদিকে রূপগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, গোলাম দস্তগীরের সুনজরের কারণে উপজেলায় আটটি কলেজ ও পাঁচটি মাধ্যমিক স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মাধ্যমিক স্কুলগুলো হচ্ছে—এইচ আর মডেল হাইস্কুল, নাওরা হাজী ইয়াদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়, আ. হক ভূইয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, তারাব পৌর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কাজী মহিউদ্দিন মডেল হাইস্কুল।
সরকারি হওয়া আটটি কলেজ হলো— নবকিশলয় হাইস্কুল অ্যান্ড গার্লস কলেজ, হাজী মো. এখলাছ উদ্দিন ভূইয়া উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ, রূপসী নিউ মডেল উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ, ইউছুফগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ, ভুলতা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ, পূর্বাচল আদর্শ কলেজ, আলহাজ হাবিবুর রহমান হারেছ সিটি কলেজ, আব্দুল হক ভূইয়া ইন্টারন্যাশনাল কলেজ।
গোলাম দস্তগীরের কারণে এবার মোড়াপাড়া কলেজ ও মোড়াপাড়া পাইলট হাইস্কুল সরকারিকরণ হয়েছে।
রূপগঞ্জে শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়নের বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী সুরাইয়া শারমিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত (চলতি) রূপগঞ্জ উপজেলায় শিক্ষার উন্নয়নে ব্যয় করা হয়েছে ২৫ কোটি ৮ লাখ টাকা। এই ব্যয় হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ, প্রাচীর নির্মাণ ও অবকাঠামোর বিভিন্ন নির্মাণ কাজে। আর এটি সম্ভব হয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর প্রচেষ্টায়। কেননা তিনি যদি শিক্ষার উন্নয়নের জন্য কাজগুলো মন্ত্রণালয় থেকে না আনতেন তাহলে এই এলাকায় শিক্ষার এত উন্নয়ন সম্ভব হতো না।’
মোড়াপাড়া সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুকুমার দাশ সারাবাংলাকে বলেন, ‘মোড়াপাড়া কলেজটি সরকারিকরণ হয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর (বীরপ্রতীক) ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। তিনি কলেজটির জন্য নতুন ভবন করে দিয়েছেন। এছাড়া পুরনো ভবন সংস্কারও করে দিয়েছেন।’
এ কলেজটি সরকারি হওয়ায় এখন রূপগঞ্জের শিক্ষার্থী স্বল্প খরচে পড়ালেখা করতে পারবে। তাই মোড়াপাড়া কলেজের পক্ষ থেকে গোলাম দস্তগীর গাজী সাধুবাদ ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।
উপজেলায় শিক্ষা উন্নয়নের বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জাহেদা আখতার বলেন, ‘গোলাম দস্তগীর গাজী সংসদ সদস্য হওয়ার পর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মানোন্নয়নে সহযোগিতা করে চলেছেন। তিনি ব্যক্তি খরচে প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ দিয়েছেন। সকলের সঙ্গে যোগযোগের জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সকল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের একটি করে মোবাইল ও সিম দিয়েছেন। অনেক বিদ্যালয়ের ভবন ছিল না সেগুলো করে দিয়েছেন। উপজেলায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের পুরস্কৃত করা ও বৃত্তির ব্যবস্থা করেছেন। তার সহযোগিতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার মান যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে তেমনি ফলাফলে এগিয়ে আছে রূপগঞ্জ উপজেলা।
রূপগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ওমর ফারুক বলেন, ‘গোলাম দস্তগীর গাজী শুধু এমপি নন, তাকে একজন শিক্ষাবিদ বলতে হবে। কেননা তিনি রূপগঞ্জের শিক্ষার উন্নয়নে ব্যক্তি উদ্যোগে যেসব কাজ করেছেন তা নজিরবিহীন। তিনি এমপি হওয়ার পর রূপগঞ্জ উপজেলাবাসীর ৬২ বছরের প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে। সেই অবসান হচ্ছে মোড়াপাড়া কলেজকে সরকারীকরণ করা। অন্যদিকে উপজেলায় অনেক প্রতিষ্ঠানের ভবন ছিল না সেগুলো তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ এনে করে দিয়েছেন। এছাড়া তিনি সরকারি যে কোনো অনুষ্ঠানেও আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে ফলাফলের ভিত্তিতে পুরস্কৃত করেন গোলাম দস্তগীর গাজী। যা শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা যোগায় এবং ভালো ফলাফলে সহায়ক ভূমিকা রাখে।’
রূপগঞ্জে শিক্ষার উন্নয়ন নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক) সারাবাংলাকে বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত রূপগঞ্জে শিক্ষার উন্নয়নে তেমন কোনো কাজ হয়নি। আমি সংসদ সদস্য হওয়ার পর থেকে প্রতিটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানঘুরে ঘুরে দেখেছি এবং উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দিয়েছি। এখন প্রায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন হয়েছে। কিছু কাজ এখনও চলমান। এছাড়া আরও অনেক কাজ হবে সেই উন্নয়ন কাজগুলো খুব দ্রুতই টেন্ডার দেওয়া হবে। তাই রূপগঞ্জে শিক্ষার উন্নয়ন হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারই এই উন্নয়ন করেছে।’
সারাবাংলা/একে
উন্নয়ন কাজ গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক নারায়ণগঞ্জ-১ রূপগঞ্জ উপজেলা