খালেদা জিয়া ও তারেকের নাম বলিনি, তাই সাজা পেলাম: বাবর
১০ অক্টোবর ২০১৮ ১৩:২৬
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারসপারসন তারেক রহমানের জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করেননি বলেই মৃত্যুদণ্ডের সাজা পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন হামলার সময় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা লুৎফুজ্জামান বাবর।
বুধবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
সাজা ঘোষণার পর বাবর আদালতকে বলেন, আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমাকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাজা দেওয়া হলো। আমি খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার নাম বলিনি। তাই আমাকে এই সাজা দেওয়া হলো।
এই মামলার রায়ে বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে স্থাপিত ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন। মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায়ে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাবর বলেন, ২১ আগস্টের ঘটনাটি ন্যাক্কারজনক। এটি ইতিহাসের জঘন্যতম একটি ঘটনা। ‘এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের সর্বোচ্চ সাজা আমিও চেয়েছি,’— বলেন বাবর।
লুৎফুজ্জামান বাবর আরও বলেন, আমি প্রতিদিন তাহাজ্জুত নামাজ পড়ি এবং আল্লাহর কাছে এই ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করি।
‘আমি আল্লাহর কাছে এই ঘটনার বিচার চাই’,— সবশেষে বলেন তিনি।
এর আগে, বুধবার (১০ অক্টোবর) পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে স্থাপিত ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং হামলার সময়ে বিএনপি-জামায়াত সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। একইসঙ্গে মামলার জীবিত বাকি ১১ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার পরপরই দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত।
এ রায়ে সন্তোষ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। তবে রায় পর্যালোচনার পর যদি মনে হয় কারও সাজা কম হয়েছে, সেক্ষেত্রে উচ্চ আদালতে সাজা বাড়ানোর আবেদন জানানো হবে বলে জানান তারা। তবে বিএনপির আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেছেন, তারেক রহমান নির্দোষ, তিনি কোনো অন্যায় করেননি। তাকে অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, এ রায়ে খুশি হলেও পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনিসহ আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, এই মামলায় তারেক রহমানের ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল। আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও বলেছেন, তারেক রহমানের ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, রায় যথার্থ, দণ্ডাদেশ পাওয়া পলাতক আসামিদের শিগগিরই দেশে আনা হবে।
অন্যদিকে, রায়কে ‘ফরমায়েশি’ অভিহিত করে এই রায় প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। দলটি সপ্তাহজুড়ে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে।
সারাবাংলা/আরএফ/টিআর
গ্রেনেড হামলা মামলা গ্রেনেড হামলা মামলার রায় লুৎফুজ্জামান বাবর