গ্রেনেড হামলার রায়, চট্টগ্রামে আ.লীগের আনন্দ মিছিল
১০ অক্টোবর ২০১৮ ১৫:২৭
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার রায় ঘোষণার পর চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্থানে তাৎক্ষণিকভাবে আনন্দ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। ১৪ দল, চট্টগ্রাম মহানগর ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ পৃথকভাবে এসব মিছিল বের করে।
বুধবার (১০ অক্টোবর) গ্রেনেড হামলার মামলার রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানসহ ১৯ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আদালত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
রায় ঘোষণার পর চট্টগ্রাম নগরীর দারুল ফজল মার্কেটের সামনে নগর আওয়ামী লীগের সভায় উল্লাস করেন নেতা-কর্মীরা। এ সময় স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে উঠে পুরো এলাকা ।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, জাতি তারেক রহমানের ফাঁসির দণ্ড প্রত্যাশা করেছিল। এরপরও যে রায় হয়েছে, আমরা আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এই রায়ের মধ্য দিয়ে দেশে আইনের শাসনের আরেক ধাপ অগ্রগতি হয়েছে।
এর আগে সমাবেশ চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় তাদের শীর্ষ নেতৃত্বের পরিকল্পনায় জঙ্গিদের ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ ও আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশে গ্রেনেড হামলা করা হয়েছিল। ১৪ বছর পর এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিচার হয়েছে। এই বিচার নিয়ে কোনো মহল যাতে পানি ঘোলা করতে না পারে সেজন্য চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ সতর্ক আছে।’
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন সারাবাংলাকে বলেন, ‘রায় যা-ই হোক, বর্তমান সরকার ও আওয়ামী লীগ যে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনে বিশ্বাস করে সেটা প্রমাণ হয়েছে। আওয়ামী লীগ একটি অজেয় দল, এই দলকে গ্রেনেড হামলা করে নিশ্চিহ্ন করা যায় না। এই দলকে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। যারা এই দলকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করেছে, রায়ের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে, তারাই ইতিহাসের আস্তুকুঁড়ে যাবে। বাংলাদেশের জনগণ তাদের কোনোদিন ক্ষমা করবে না।’
দারুল ফজল মার্কেটের সামনে থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আনন্দ মিছিল বের করেন। পৃথকভাবে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুর নেতৃত্বে পৃথক আনন্দ মিছিল বের হয়।
দারুল ফজল মার্কেটের সামনে থেকে ১৪ দলের নেতা-কর্মীরাও পৃথকভাবে মিছিল বের করেন।
এদিকে নগরীর নিউমার্কেট এলাকায় দোস্ত বিল্ডিংয়ের সামনে থেকে আনন্দ মিছিল বের করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম এতে নেতৃত্ব দেন।
এম এ সালাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার গ্রেনেড হামলা করে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকেই শুধু হত্যার চেষ্টা করেনি। শীর্ষ নেতৃত্বকে হত্যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। ১৪ বছর পর যখন এই নৃশংস ঘটনার বিচার হচ্ছিল, সেটা বানচালের জন্যও বিএনপি-জামায়াত অনেক ষড়যন্ত্র করেছিল। বাংলার জনগণ তাদের ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে বিচার নিশ্চিত করেছে।’
রায় ঘোষণার পর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা মিছিল-সমাবেশ করেছেন। এতে নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম নগরীর সিটি গেইট, আগ্রাবাদ, বারিক বিল্ডিং মোড়, বহদ্দারহাট, জিইসি মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় রায় ঘোষণার পর আনন্দ মিছিল হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/এমআই